-নাজমুল হক
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০১৯ সালের তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে দারিদ্রের হার ২০.৫%, হত দারিদ্রের হার ১০.৫%। খাদ্যের লাগামহীন মুল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দারিদ্রের হার বেড়ে দ্বিগুন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েহে। দারিদ্র দুরীকরন এবং নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে যাকাত একটি বিশাল সহায়ক শক্তি। মুসলানদের জন্য ফরজ ইবাদত নামাজ রোজার পরেই যাকাতের স্থান। রাসুল (সঃ) খোলাফায়ে রাশেদিন যাকাতের মাধ্যমে দারিদ্রতা বিমোচন করেছেন। ইসলামী অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম হলো যাকাত বন্টনের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ করা, উৎপাদন বাড়ানো এবং উদ্যোক্তা তৈরি করেছেন। যাকাত আরবি শব্দ। এর বাংলা অর্থ হচ্ছে পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা, বর্ধিত হওয়া, বৃদ্ধি করা, মার্জিত করা, সংযুত করা, পূর্ণতাদান ইত্যাদি। মুসলমাদের মধ্যে যাদের নেসাব পরিমান ধন-সম্পদ আছে, তাদের সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ গরিব মিসকীন ও অভাবী লোকদের মধ্যে বণ্টন করাই হলো যাকাত । যাকাত ইসলামী সরকার ব্যবস্থার অন্যতম মৌলিক স্তম্ভ। যাকাত মুসলমানদের অন্যতম বাধ্যতামূলক ইবাদত। ঈমানের পর নামাজ আর নামাজের পরই যাকাতের স্থান।
রাসুল (সঃ) বলেছেনঃ ১) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। সেগুলো হলো : আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং মুহম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল। সালাত কায়েম করা, যাকাত প্রদান করা, রমযানের রোযা রাখা এবং হজ্ব করা (বুখারী ও মুসলিম)। ইসলামী শরীয়তে যাকাত প্রদান না করা যেমন চরম অপরাধ, ঠিক তেমনি যাকাত অর্থশীলদের সম্পদে অভাবীদের অধিকার হবার কারণে যাকাত পরিশোধ না করলে সমাজের একটি বিরাট অংশ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। যাকাত সমাজের অভাবি মানুষকে জনসম্পদে রুপান্তর করে, আয় রোজকার এবং হালাল রোজগারের সুযোগ তৈরি করে সমাজকে সুষ্ঠু, সুন্দর, বিকশিত ও সুসংহত করে তোলে। যাকাত সুদের অভিষাপমুক্ত পুজি সরবরাহ করে উৎপাদন ও কমসংস্থান৷ বৃদ্ধি করে। আরবের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী খাদিজা (রা:) একজন মেধাবী নারী উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগে যাকাতের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ ভুমিকা রাখেন এবং অনেক নারী উদ্যোক্তা তৈরি করেন।
যাকাতকে আল্লাহ ফরয করেছেন, ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী যাকাত আদায় করা ফরয। কুরআনের সূরা বারাকার ৪৩, ৮৩ এবং ১১০, আন-নিসার ৭৭, আল-হজ্ব-এর ৭৮, আন-নূর ৫৬, আহযাব-এর ৩৩, মুজাদালার ১৩, মুযাম্মিলের ২০নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘নামাজ কায়েম করো এবং যাকাত প্রদান কর।
যাকাত শুধু রাসুল (সঃ) উপরই ফরয করা হয়নি বরং পূর্ববর্তী নবীর উম্মতগণের উপরও যাকাতকে ফরয করা হয়েছিল। আল্লাহতায়ালা বলেছেন- ‘আমি তাদেরকে মানুষের নেতা বানিয়েছি, যারা আমার বিধান অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করে এবং পথ প্রদর্শন করে। আমি অহীর সাহায্যে তাদেরকে ভালো কাজ করার, নামাজ কায়েম করার এবং যাকাত আদায় করার আদেশ করেছি, তারা খাঁটিভাবে আমার ইবাদত করতো এবং হুকুম পালন করতো।’ সূরা আম্বিয়া-৭৩
এছাড়াও সূরা মায়েদার ১২ এবং ৫৫ নম্বর আয়াতে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়েছে। যাকাত ফরজ সম্পর্কে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায়, রাসূল (সাঃ) মুয়াজকে (রাঃ) ইয়েমেনের শাসনকর্তা নিযুক্ত করে পাঠাবারকালে নি¤েœাক্ত নির্দেশ প্রদান করেন, হে মুয়াজ! তুমি আহলে কিতাবের লোকদের কাছে যাচ্ছো। তাদের প্রথমে আল্লাহ চাড়া কোন ইলাহ নাই এবং মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল এই ঘোষণা দেয়ার আহŸান জানাবে। এই আহŸান মেনে নিলে তাদের বলবে-আল্লাহ তাদের উপর দিন-রাতে পাঁচবার সালাত আদায় করা ফরয করেছেন। তারা যদি একথা মেনে নেয় তাহলে তাদের জানাবে-আল্লাহ তায়ালা তোমাদের উপর যাকাত ফরয করে দিয়েছেন, যা তোমাদের ধনীদের কাছ থেকে আদায় করে তোমাদের গরিবদের মাঝে বণ্টন করে দেয়া হবে।(বুখারী-মুসলিম)। যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্দের ঘোষণা : আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদেরকে কাফির ও মুশরিকদের বিরুদ্ধে লড়াই করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং পরে বলেছেন, ‘তারা যদি কুফর ও শিরক থেকে তাওবা করে খাঁটিভাবে ঈমান আনে এবং নামাজ কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাইয়ে পরিণত হবে- সূরা তাওবা-১১। অর্থাৎ শুধু কুফর ও শিরক থেকে তাওবা করা এবং ঈমান আনার কথা প্রকাশ করাই যথেষ্ট নয়, সে যে কুফর ও শিরক থেকে তাওবা করেছে এবং প্রকৃতপক্ষেই ঈমান এনেছে, তার প্রমাণের জন্য যথারীতি নামাজ আদায় করা ও যাকাত দেয়া অপরিহার্য। অতএব তারা যদি তাদের এরূপ বাস্তব কাজ দ্বারা এ কথার প্রমাণ পেশ করে, তাহলে নিশ্চয়ই তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই, অন্যথায় তাদেরকে ভাই মনে করাতো দূরের কথা, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধও বন্ধ করা যাবে না।
রাসূলের (সাঃ) ইন্তিকালের পর কিছু লোক কালেমা, নামাজ, রোযা মেনে নিয়ে কেবল যাকাত দিতে অস্বীকার করে। তাদের বিরুদ্ধে প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রাঃ) যুদ্ধ ঘোষণা করেন। তিনি ঘোষণা করে দেন ‘যে ব্যক্তি নামাজ থেকে যাকাতকে বিচ্ছিন্ন করবে, আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো।’ এর কারণ হলো এই যে ‘ঈমানদার লোকদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, তারা সালাত কায়েম করে, যাকাত পরিশোধ করে এবং তারা আল্লাহর সম্মুখে মাথানতকারী হয়ে থাকে সূরা মায়েদা-৫৫।যেহেতু ঈমানের অন্যতম শর্তই হচ্ছে যাকাত প্রদান, সেহেতু যারা যাকাত দিতে অস্বীকার করে তাদের ঈমান থাকতে পারে না, তারা অবশ্যই কাফের। হযরত আব্দুল্রাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। রাসূল (সাঃ) বলেছেন-লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে আমি আদিষ্ট হয়েছি, যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেবে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইল্লাহ নেই, মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল ও সালাত কায়েম করবে ও যাকাত প্রদান করবে বুখারী ও মুসলিম।
যাকাত না দেয়ার পরকালীন শাস্তি : ১) আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যারা সোনা-রুপা (অর্থ-সম্পদ) পুঞ্জিভ‚ত করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে খরচ করে না, তাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও! এমন একদিন আসবে যেদিন সেসব সোনা রুপা জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, তারপর তা দিয়ে তাদের মুখমন্ডল, পার্শ্বদেশও পৃষ্ঠদেশে দাগ দেয়া হবে এবং বলা হবে, এই হলো তোমাদের সেসব অর্থ-সম্পদ যা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। অতএব এখন জমা করে রাখা সম্পদের স্বাদ গ্রহণ করো সূরা তাওবা : আয়াত ৩৪-৩৫। ২) হযরত আবু হুরাইয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূলে করীম (সাঃ) বলেছেন-আল্লাহ যাকে অর্থ-সম্পদ দিয়েছেন, সে যদি সেই অর্থ-সম্পদের যাকাত প্রদান না করে, তবে তা কিয়ামতের দিন একটি বিষধর অজগরের রূপ ধারণ করবে। যার দু’চোখের ওপর দু’টি কালো চিহ্ন থাকবে। সে বলবে-আমিই তোমার অর্থ-সম্পদ, আমিই তোমার সঞ্চয়। ৩) যারা আল্লাহর দেয়া অর্থ-সম্পদে কার্পণ্য করে, তারা যেন মনে না করে যে, এটা তাদের জন্য মঙ্গল, বরং এটা তাদের জন্য অত্যন্ত খারাপ। তারা যে অর্থ-সম্পদ নিয়ে কার্পণ্য করছে তাই কিয়ামতের দিন তাদের গলার বেড়ি হবে, (সূরা-আল ইমরান-১৮০)- বুখারী।
যাকাত সম্পদ বৃদ্ধি করে : যাকাত দিলে মানুষের সম্পদ কমেনা, বরং বাড়ে। যারা গভীর নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর নির্দেশমতো তাঁর পথে ব্যয় করেন, পরম করুণাময় আল্লাহ এর বিনিময়ে কেবল পরকালে নয়, দুনিয়াতেও ব্যাপক বরকত, সচ্ছলতা ও উন্নতি দান করেন।
যেমন আল্লাহ বলেন- “আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে তোমরা যে যাকাত দাও, মূলত যাকাত দানকারী সম্পদ বৃদ্ধি করে সূরা রুম-৩৯। অন্যত্র বলা হয়েছে-“যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের খরচের দৃষ্টান্ত হচ্ছে একটি শস্য বীজের মতো, যে বীজ থেকে সাতটি শীষ বের হয় এবং প্রত্যেকটি শীষে হয় একশ’টি দানা। আল্লাহ যার আমলকে চান এভাবেই বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহতো সীমাহীন ব্যাপকতার অধিকারী, জ্ঞানী সূরা বাকারা-২৬১।
এভাবে আল্লাহ যাকাত প্রদানকারীদের অনেক অনেক শুভ সংবাদ দিয়েছেন। ১) যাকাত আদায় করা ইসলামী রাষ্ট্রের সরকারের অপরিহার্য দায়িত্ব। এ সম্পর্কে আল্লাহ কুরআনে বলেন-“তারা হচ্ছে সেই সব লোক, যাদেরকে আমি রাষ্ট্র ক্ষমতা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত ব্যবস্থা চালু করবে, মানুষকে সৎকাজের আদেশ করবে এবং অন্যায়-অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে সূরা হজ্জ-৪১। ২) আল্লাহ আরও বলেন “হে নবী, তাদের সম্পদ থেকে যাকাত আদায় করে তাদের পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করো” সূরা তাওবা-১০৩। ৩) নবী করীম (সাঃ) বলেছেনঃ -“তোমাদের বিত্তবানদের থেকে যাকাত আদায় করে তোমাদের দরিদ্রদের মধ্যে তা বণ্টন করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি।” রাসুল (সাঃ) এবং খোলাফায়ে রাশেদীনদের আমলে ইসলামী সরকার কর্তৃক যাকাত আদায় করে তা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বণ্টন করা হতো।
যারা যাকাত দিবে : সালাত ফরয হবার জন্যে যেমন কিছু শর্ত আছে, তেমনি যাকাত ফরয হবার জন্যেও কিছু শর্ত আছে। শরীয়াহ বিশেষজ্ঞদের মতে এমন প্রত্যেক ব্যক্তিরই ওপর যাকাত ফরয, যাদের মধ্যে নি¤েœাক্ত শর্তাবলী পাওয়া যায়-১, মুসলিম, ২. স্বাধীন, ৩. আকেল হওয়া, ৪. বালেগ হওয়া, ৫. নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকা, ৬. পূর্ণাঙ্গ মালিকানা থাকা ও ৭. এক বছর অতিবাহিত হওয়া। যারা যাকাত পাবে : আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যাকাত কাদের প্রাপ্ত অর্থাৎ কাদের মধ্যে যাকাতের অর্থ বণ্টন করে দিতে হবে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন-“এসব সাদাকাতো (যাকাত) কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য, ঋণ ভারাক্রান্তদের, আল্লাহর পথে ও মুসাফিরদের জন্য। এটা আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” (সূরা তাওবা-৬০)
৮টি খাতে যাকাতের অর্থ ব্যবহারের জন্যে সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ পাওয়া যায়। সেগুলো হচ্ছে-১. দরিদ্র জনসাধারণ, ২. অভাবী ব্যক্তি, ৩. যে সকল ব্যক্তি/কর্মচারী যাকাত আদায়ে নিযুক্ত রয়েছে, ৪. নওমুসলিম, ৫. ক্রীতদাস বা গোলাম মুক্তি, ৬. ঋণগ্রস্থ ব্যক্তি, ৭. আল্লাহর পথে মুজাহিদ এবং ৮. মুসাফির। ওপরে বর্ণিত আটটি খাতেই যদি যাকাতের অর্থ ব্যয় হয় তাহলে দরিদ্রতা দূর হয়ে যাবে এবং উৎপাদন ও আয় রোজকার বৃদ্ধি পাবে।যাকাত প্রদান করবে কাহারাঃ ( নারী ও পুরুষের জাতীয় জরিপ করে যাকাত প্রদানের যোগ্যদের তালিকা প্রনয়ন করতে হবে এবং যাকাত পাওয়ার যোগ্য ২০.৫% দারিদ্র এবং ১০.৫% হত দারিদ্র মানুষের তালিকা জাতীয় ডাটাবেইজ এ রাখতে হবে।
মসজিদ ভিত্তিক যাকাত প্রদানকারীর তালিকা অনুসারে যাকাত আদায় করতে হবে ) (১) ১ কোটি ২০ লক্ষ অভিবাসী যাদের নেসাব পরিমান ধন সম্পদ আছে। (২) যে সকল অভিবাসী জাতিসংঘ মিশন এ কাজ করে (৩) যাদের ব্যাংক, বীমা এবং বিভিন্ন আথিক প্রতিস্টানে এফডিআর জমা আছে। (৪) উপজেলা, জেলা, সিটিকপোরেশনের বাড়ী ওয়ালা এবং ফ্লাটের মালিক। (৫) শিল্পপতি ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন ব্যাংক বীমা শিল্প কলকারখানার মালিক (৬) বিভিন্ন পেশাজীবি ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার শিক্ষক আইনজীবি ও চাকুরীজিবী ইত্যাদি। (৭) যে সকল নারীর গোল্ড এবং নেসাব পরিমান ধন সম্পদ আছে। (৮) বিভিন্ন মাকেট এর মালিক (৯) বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী ইত্যাদি। (১০) উন্নত রাস্ট্রে বসবাসকারী অভিবাসী ও ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১লক্ষ কোটি টাকা যাকাত আদায় করার সুযোগ আছে। ১০,০০০ টাকা হারে যাকাত প্রদানকারী ৫০ লক্ষ = ৫০০০ কোটি টাকা। ২০,০০০ টাকা যাকাত প্রদানকারী ২০ লক্ষ= ৪,০০০ কোটি টাকা। ৩০,০০০ টাকা যাকাত প্রদানকারী ২০ লক্ষ= ৬,০০০ কোটি টাকা। ৪০,০০০ টাকা যাকাত প্রদানকারী ১০ লক্ষ= ৪,০০০ কোটি টাকা। ৫০,০০০ টাকা যাকাত প্রদানকারী ১০ লক্ষ= ৫,০০০ কোটি টাকা। ৭০,০০০ টাকা যাকাত প্রদানকারী ১০ লক্ষ= ৭,০০০ কোটি টাকা।১০০,০০০ টাকা যাকাত প্রদানকারী ২৫লক্ষ= ২৫,০০০ কোটি টাকা। ২০০,০০০ টাকা যাকাত প্রদানকারী ১০ লক্ষ= ২০,০০০কোটি টাকা। ৫০০,০০০ টাকা যাকাত প্রদানকারী ৫ লক্ষ= ২৫,০০০ কোটি টাকা
যাকাতের ১(এক) লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে প্রতিজনকে ৫০,০০০ টাকা হারে প্রতিবছর ২ কোটি দরিদ্র নারীদের দারিদ্রতা বিমোচন করা যায়। আয় রোজকার কর্মসংস্থান বিদ্ধি করার মাধ্যমে ৫ বছরে ২ কোটি নারী উদ্যোক্তা তৈরি হবে। পল্লী উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। সামাজিক নিরাপত্তা প্রোগ্রামর আওতায় বন্যা খরা এবং প্রাকৃতিক দুযোগ মোকাবিলায় সাহায্য করা যাবে। দরিদ্র মানুষের বাসস্থান, বিশুদ্ধ পানির জন্য হ্যান্ড টিউবওয়েল, স্যানেটারী ল্যাটিন, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যাবে। যাকাত গ্রহণকারী নারীরা যাকাত প্রদানের যোগ্যতার অধিকারী হবে। এভাবে ৫ বছরে দরিদ্র মানুষের দারিদ্রতা দূর করে ১ কোটি নারী উদ্যোক্তা তৈরি করা সম্ভব।
লেখক : গবেষক ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ।