নিজস্ব প্রতিনিধি :
ঢাক আর শঙ্খধ্বনী। মুখরিত দশমি ঘাট। একদিকে বিদায়ের সুর। অন্যদিকে উৎসবের আমেজ। নেচে-গেয়ে উৎসবে মেতে উঠে সনাতন ধর্মালম্বীরা। বুধবার ফেনী শহরের কালিপালে বিজয়া দশমির নানা আচার-অনুষ্ঠান আর দিনশেষে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হয়েছে বাঙ্গালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব ৫ দিনব্যাপী শারদীয় দূর্গাপূজা। দুপুর থেকে ভক্ত-পূজারীরা দশমি ঘাটে ভীড় জমতে থাকে। বিকাল ৪টায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় দশমি ঘাট। ট্রাক-পিকআপ করে বিভিন্ন মন্ডপ থেকে প্রতিমা নিয়ে দশমি ঘাটে হাজির হন পূজারিরা।
এ উপলক্ষ্যে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে বিজয়ার শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান, পুলিশ সুপার জাকির হাসান, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী। পূজা উদযাপন পরিষদ সাধারণ সম্পাদক অনিল চন্দ্র নাথের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি শুকদেব নাথ তপন, পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি রাজিব খগেশ দত্ত প্রমুখ।
এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) নাদিয়া ফারজানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অং প্রু মারমা, সদর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান এ.কে শহীদ উল্যাহ খোন্দকার, কালিদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম, ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সাকা, মোটবী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ, ফেনী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির পরিচালক নুরুল হাদী ওয়াসিম, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোফায়েল আহম্মদ তপু, সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদ, সদর উপজেলা সভাপতি আকরামুজ্জামান রাজু, সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন প্রমুখ প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
শেষে একেএকে প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ভক্ত-পূজারিরা। একইভাবে জেলার ১৪৩টি মন্ডপের প্রতিমাগুলো বিভিন্ন স্থানে বিসর্জন দেয়া হয়।
ভক্তরা বলেন, দেবী দুর্গা অশুভ শক্তিকে ধ্বংস করতে এ ধরায় এসেছিলেন। পাঁচ দিন থাকার পরে চলে যাচ্ছেন। এটা দুঃখের একটি দিন। মায়ের কাছ থেকে আশীর্বাদ নিয়েছেন। দশমীর দিনে দুর্গাকে মিষ্টিমুখ করানো ও পান-সুপারি খাওয়ানো হয়। এরপর দেবী দুর্গার পায়ের কাছে রাখা সিঁদুর দিয়ে শুরু হয় ‘সিঁদুর’ উৎসব।
তারা বলেন, দুর্গা মা এই কয়েক দিন তাদের কাছে আশীর্বাদ হয়ে এসেছিলেন। চলে যাওয়ার সময় মাকে এগিয়ে দিতে এসেছেন। সামনে বছর আবার মা আসবেন। সেই অপেক্ষায় থাকবেন।