আলী হায়দার মানিক :
পবিত্র ঈদুল আযহাকে ঘিরে প্রতিবছর কামার পল্লীতে ব্যস্ততা বাড়লেও ডিজিটাল পদ্ধতির কারনে চিত্র বদলেছে। অন্যবারের তুলনায় কামারশালায় নেই কোন ভীড়।
জানা গেছে, ধর্মপ্রাণ মুসলিম উম্মার সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা আর মাত্র তিন দিন বাকী। ঈদুল আযহা মানে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পশু কোরবানী দিয়ে থাকেন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা গরু, মহিষ, ভেড়া, উট, ছাগল, দুম্বা ক্রয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কোরবানীর পশু জবাই ও গোস্ত কাটতে চাপাতি, দামা, দা, বটি ও ছোরা তৈরিতে দিন-রাত কামারশালায় টুংটাং শব্দ শুনা গেলেও এবার চিত্র ব্যতিক্রম। ঈদুল আযহাকে ঘিরে মাসব্যাপী নতুন চুরি ও দামা এবং বটি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতে হতো। গত কয়েকবছর ধরে বাসা-বাড়ি গিয়ে দা-চুরি ও বটি ধারানোর কাজ করেন শ্রমজীবিরা। ফলে আগের মতো কাজের চাপ না থাকায় কামাররা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
কয়েকজন কামার জানান, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি হওয়ায় লোহা ও কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দা-চুরি তৈরিতে খরচ বেশী হচ্ছে।
সার্কিট হাউজ রোডের নিত্যানন্দ কর্মকার ষ্টোরের মালিক ছোটন কর্মকার ফেনীর সময় কে জানান, এবার কাজ গত বছরের তুলনায় অনেক কম। ১৭ বছর কামারের কাজ করি। কিন্তু এবারের মত কম কাজ আর কখনো করিনি। ঈদ আসছে সেজন্য নতুন কর্মচারীও ঠিক করেছিলাম। কাজ কম হওয়ায় সেও দীর্ঘসময় বসে থাকতে হয়।
ছোটন কর্মকার আরো বলেন, ডিজিটাল মেশিন মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করছে তাই আমাদের মত কামারদের কাছে মানুষ কম আসছে। আগে একসময় মানুষ দা ও ছোরা নিয়ে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতো। এখন আর আগের মত মানুষ সময় দেয় না।
ফেনী সানঘরের প্রোপ্রাইটর মো: আবদুর রহীম ফেনীর সময় কে জানান, ভাসমান কিছু লোক বাসা-বাড়িতে গিয়ে ডিজিটাল মেশিনের মাধ্যমে শান দিচ্ছে। মানুষ সহজে যেখানে কাজ পাচ্ছেন সেখানে কাজ করবেন এটাই স্বাভাবিক। দূরে আসার তো প্রয়োজন নেই। তাই আমাদের দোকানে লোকে ভিড় অন্য বছরের তুলনায় কম।
এয়াকুব শরীফ শিমুল জানান, নিত্যপণ্যের বাজার যেমন বেসামাল তেমনি অন্য বছরের তুলনায় এবার চুরি-চাপাতি, দা-বটির দাম বেশী চাওয়া হচ্ছে। অনেকটা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বলা চলে। কিন্তু মানুষের আয় বৃদ্ধি হয়নি। সবকিছুর মূল্য চড়া স্বল্প আয়ের মানুষগুলো হিমশিম খেতে হচ্ছে।