নিজস্ব প্রতিনিধি :
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফেনীর ৫ উপজেলায় প্রার্থী হন ৩৪ জন। তাঁদের মধ্যে পরাজিত ১৯ প্রার্থীর ১৮ জনই নির্ধারিত ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন। ফেনীতে ছয়টি উপজেলা থাকলেও পরশুরাম উপজেলার তিনটি পদেই প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। ফেনী সদর, সোনাগাজী, দাগনভূঞা, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় ১৫টি পদের বিপরীতে ৩৪ জন প্রার্থী হন। চারটি পদে একক প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। বাকি ১১টি পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৩০ জন, তাঁদের মধ্যে ১৯ জন পরাজিত হন। পরাজিত প্রার্থীদের মধ্যে কেবল ফুলগাজী উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদের মাহবুবুল হক নির্ধারিত ভোট পেয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, কোনো নির্বাচনী এলাকার প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ ভোট যদি কোনো প্রার্থী না পান, তাহলে নির্বাচন কমিশনে ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। ফেনীতে নির্ধারিত ১৫ শতাংশ ভোট না পেয়ে জামানাত হারানো প্রার্থীরা হলেন সদর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মনজুর আলম, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আরজুমান আক্তার, সোনাগাজী উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: মুজিবুল হক, মহিউদ্দিন, নুর আলম, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হায়দার আলী, দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বিজন ভৌমিক, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ ইউছুপ আলী, ছাগলনাইয়া উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী এ এসএম শহিদুল্লাহ মজুমদার, মো: আবদুল হালিম, কাজী জায়েদ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, মেহেদী হাসান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নাছিমা আক্তার এবং ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: জাফর উল্যাহ ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রহিম পাটোয়ারি, পরিমল চন্দ্র রায় ও সাইফ উদ্দিন মজুমদার।
ফেনীর ছয়টি উপজেলার মধ্যে সর্বশেষ ৫ জুন ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন হয়। ফেনী সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে শুসেন চন্দ্র শীল পেয়েছেন ২ লাখ ১৩ হাজার ৮৯৩ ভোট। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মনজুর আলম পেয়েছেন ৭ হাজার ৩০৯ ভোট। সদর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে এ কে শহীদ উল্যাহ খোন্দকার পেয়েছেন ২ লাখ ৩ হাজার ৮০৪ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম কিবরিয়া পেয়েছেন ১৪ হাজার ৮৯৫ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মুর্শিদা আক্তার পেয়েছেন ২ লাখ ২ হাজার ৮৬৬ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আরজুমান আক্তার ১৬ হাজার ৩৪৫ ভোট পেয়েছেন।
সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জহির উদ্দিন মাহমুদ পেয়েছেন ৮৬ হাজার ১৭১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. মুজিবুল হক পেয়েছেন ৭০৯ ভোট। এছাড়া প্রার্থী মহি উদ্দিন ৪২০ ভোট এবং নুর আলম ৩৫৬ ভোট পেয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাখাওয়াতুল হক বিটু পেয়েছেন ৮৩ হাজার ২৫৪ ভোট। তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হায়দার আলী পান ৩ হাজার ২০০ ভোট। সোনাগাজীতে একক প্রার্থী থাকায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে খোদেজা খানম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন।
দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১ লাখ ১৭ হাজার ১৫৮ ভোট পেয়ে দিদারুল কবির রতন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজন ভৌমিক পেয়েছেন ৩ হাজার ১৬৬ ভোট। নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন হায়দার ১ লাখ ৮ হাজার ৮২০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ ইউছুপ আলী পেয়েছেন ৯ হাজার ১৫৪ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী ছিল।
ছাগলনাইয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মজুমদার পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৯২১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এএসএম শহীদুল্লাহ মজুমদার পেয়েছেন ১ হাজার ৩৪৯ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিবি জোলেখা পেয়েছেন ৪৯ হাজার ১৫০ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নাছিমা আক্তার পেয়েছেন ৭ হাজার ১১৪ ভোট। একক প্রার্থী থাকায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে এনামুল হক মজুমদার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন।
ফুলগাজী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে হারুন মজুমদার পেয়েছেন ২৭ হাজার ৬৩৫ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো: জাফর উল্যাহ ভূঞা পেয়েছেন ৭৭৫ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে অনিল বণিক পেয়েছেন ১১ হাজার ৮৯ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাহবুবল হক পেয়েছেন ৭ হাজার ২৬৫ ভোট। এই পদে আবদুর রহিম পাটোয়ারি, পরিমল চন্দ্র রায় ও সাইফ উদ্দিন মজুমদার নির্ধারিত ১৫ শতাংশ ভোট পাননি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য একজন প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুকূলে এক লাখ টাকা জমা দিতে হয়। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য ৭৫ হাজার টাকা জমা দিতে হয়। নির্ধারিত ভোট যারা পাননি, সবার জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।