আরিফ আজম :
বছরখানেক আগেও ছিল খানাখন্দে ভরা। যেসব ছিল সেসব রাস্তা নামস্বর্বস্ব। গাড়ী চলা তো দূরের কথা হাঁটাচলাও ছিল দুষ্কর। খানাখন্দে ভরা গ্রামের সেই অজপাঁড়া রাস্তা এখন পচঢালা পথ। গ্রামীণ পটভূমির বদলে পুরোদস্তুর শহুরে পরিবেশ। অবকাঠামোগত উন্নয়নের এ প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নের দীর্ঘদিনের দূর্ভোগ লাগব হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা দারুন খুশি। সড়ক টেকসই করতে দুই পাশে ব্লক তৈরি করায় ছোট-বড় আকারের বেশ কয়েকটি পুকুরের কারনে পর্যটন এলাকার মতো সৌন্দর্যবর্ধন হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের কোলঘেঁষা তুলাবাড়িয়া এলাকাটি সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে। তুলাবাড়িয়া হাই স্কুল সংলগ্ন স্থান থেকে দশমি ঘাট, জয়নাল হাজারী কলেজ ও লালপো এলাকা পর্যন্ত সড়কের প্রায় ১২শ মিটার দেখলে মনে হয় এটি যেন পর্যটন এলাকার দৃশ্য। সড়কে চলাচলকারী সেখানকার তুলাবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও তুলাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম, দূর্গামন্দির, তপবনাশ্রমের ভক্ত-পূজারী হাজার হাজার পথচারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের চিত্র বদলে গেছে। সহজেই চলাচল করছে ছোট-বড় সবধরনের পরিবহন।
স্থানীয়রা জানান, আগে ওই এলধাকায় দিনেও যাওয়া অসম্ভব ছিল, এখন রাতেও যাওয়া যায়। মালামাল আনা-নেয়া, আচার-অনুষ্ঠান, বিয়ে-শাদী, মৃত্যুর পর লাশ বের করতে কষ্ট হয়েছিল। এখন আর সেই কষ্ট নেই বলে তারা উল্লেখ করেন।
তুলাবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জিত কুমার দাস ফেনীর সময় কে জানান, তার স্কুলে তুলাবাড়িয়া ছাড়াও আলোকদিয়া, চেওরিয়া, মহেষপুর, মধুপুর, পশ্চিম সিলোনীয়া এলাকা থেকে ১১ জন শিক্ষক সহ আড়াইশ শিক্ষার্থী নিয়মিত যাতায়াতে ভোগান্তি দূর হয়ে গেছে। আগে যেখানে পায়ে হেঁটে যাতায়াত কষ্ট হতো এখন নির্বিঘ্নে অনেকে সাইকেলে যাতায়াত করে। এছাড়া উপজেলা পরিষদ থেকে ১০ জন ছাত্রীকে সাইকেল দেয়ার পর অনেক অভিভাবক উদ্বুদ্ধ হয়ে ছাত্রদের পাশাপাশি আরো ছাত্রীদের সাইকেল কিনে দিচ্ছেন।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী দীপ্ত দাস গুপ্ত ফেনীর সময় কে বলেন, সড়কটি সংস্করে এলজিইডি ৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
কালিদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম ফেনীর সময় কে বলেন, তুলাবাড়িয়া এলাকাটি দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে। সড়কটিতে বিভিন্ন স্থান থেকে অনেকে ‘সেলফি রোড’ বলে। সেখানে বিকাল বেলায় ঘুরতে গিয়ে ছবি তুলে সময় কাটায়।
সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল ফেনীর সময় কে বলেন, সড়কটি নির্মাণের ফলে তুলাবাড়িয়া এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজের পাশাপাশি যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। একবছর আগেও তুলাবাড়ীয়া এলাকা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্ছিত ছিল। সড়কের কোন উন্নয়ন ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের অংশ হিসেবে নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি তার বরাদ্দের বৃহৎ একটি অংশ থেকে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দনভাবে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে।