নিজস্ব প্রতিনিধি :
মামুন চৌধুরী। পরিবহন ব্যবসার পাশাপাশি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। জেলা যুবলীগের সহ-সম্পাদকের পাশাপাশি ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও রয়েছেন। চিকিৎসার জন্য ৩০ জুলাই ভারত সফরে গিয়ে দেশে ফিরেছেন ৫ আগস্ট রাতে। অথচ ৪ আগস্ট দুপুরে ফেনী শহরের ট্রাংক রোডের পুরাতন জেল রোডে টমটম চালক জাফর আহাম্মদ হত্যার ঘটনার মামলায় তাকে ৯২নং আসামী করা হয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী আছিয়া বেগম বাদি হয়ে ২শ ৫ জনের নাম উল্লেখ এবং আরও ১শ থেকে ১শ ৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য ছাত্র আন্দোলন ইস্যুতে হত্যাকান্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি হত্যা মামলা প্রশ্নবিদ্ধ করতে এমনটি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।
মামলার আর্জিতে জাফরের স্ত্রী আছিয়া বেগম উল্লেখ করেন, গত ৩ আগস্ট শহরের ট্রাংক রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটম চালক জাফর আহাম্মদ অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলনে তার অংশগ্রহণের বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে প্রকাশ হয়। ওই দিন শর্শদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঁইয়াসহ আরও ১০-১১ জন আসামি জাফরের বাড়িতে গিয়ে হত্যার হুমকি দেন। ভয়ে আছিয়া তার স্বামীকে সেদিন বাসায় আসতে নিষেধ করেন। জাফরও তার স্ত্রীর কথামতো সেদিন আর বাসায় যাননি। পরদিন দুপুরে জাফরকে শহরের পুরাতন জেল রোডের জেলা কারাগারের সামনে পেয়ে ধাওয়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
মামুন চৌধুরীর পরিবার সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন মামুন চৌধুরী কিডনি, ডায়াবেটিক, প্যাথিলিভার ও প্রেসার সহ নানা রোগে ভুগছেন। কলকাতার একটি হাসপাতালে নিয়মিত চেকআপের জন্য ৩০ জুলাই ভারতে গিয়েছেন। সেখানে চিকিৎসার পাশাপাশি ৭ দিনের সফরকালে কলকাতা ছাড়াও দিল্লী, কাশ্মির ভ্রমণ করেছেন।
অপর একটি সূত্র জানায়, মামুন চৌধুরী মহিপালে তিশা প্লাস, শান্তি পরিবহন ও খাগডাছড়ি এক্সপ্রেসের ব্যবসা করছেন। তার ব্যবসা দখলে নিতে একটি চক্র গত কিছুদিন ধরে পাঁয়তারা করছেন। এর অংশ হিসেবে দেশে না থাকা স্বত্ত্বেও তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন খান বলেন, কেউ দেশে না থাকলে আসামী করা ঠিক নয়। ব্যক্তিগত আক্রোশজনিত থেকে কেউ আসামী হতেই পারে। অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে দেশে থাকার পরও অনেকে ভারত যাতায়াতের ক্ষেত্রে পাসপোর্টে স্থলবন্দরগুলো থেকে এ্যারাবেল সীল নিতে পারেন। তবে তদন্ত কর্মকর্তা যথাযথ বাছাই করে আসামী থেকে প্রত্যাহার করে নিবে।