নাজমুল হক :
বাংলাদেশের তিন দিক শত্রুবেষ্টিত ভারত। ভারত নিজেদের স্বার্থে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশকে করদরাজ্যে রুপান্তরের জন্য ভারত বড়ভাইসুলভ আচরণ করেই যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমান হত্যাকান্ডের সাথে ভারতের ’র’ জড়িত ছিলো। ভারতের ’র’ প্রথম এর পরিকল্পনা মোতাবেক ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা ভারত থেকে বাংলাদেশে আসেন এবং ১৩ দিন পরে ৩০ শে মে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান চট্রগ্রামে নিহত হন। ’র’ এর দ্বিতীয় পরিকল্পনা মোতাবেক ৩০ মে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হবার পর, এরশাদের রাজনৈতিক অভিলাষ প্রকাশ হয়ে পড়ে। ২৪ মার্চ ১৯৮২ সালে এরশাদ রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। এখানে উল্লেখ্য যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পরে শেখ হাসিনা ভারতে ’র’ এর আশ্রয়ে ছিলেন এবং জেনারেল এরশাদ ছিলেন ভারতে বাংলাদেশ দূতাবাসে সামরিক এটাসি। উভয়ের পরিকল্পনায় এবং ’র’ এর তত্তাবধানে এরশাদ ক্ষমতা দখল করে, শেখ হাসিনা রাজনীতির বি-টিম হিসেবে জেনারেল এরশাদকে ৯ বছর ক্ষমতায় থাকতে সহযোগিতা করে এবং ১৯৮৬ সালে বিএনপিকে বাদ দিয়ে বিরোধী দলের আসন দখল করে।
তেমনি শেখ হাসিনাকে ১৯৯৬, ২০০৯, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে ক্ষমতায় থাকতে জেনারেল এরশাদ এবং জাতীয় পাটি রাজনীতির বি-টিম হিসেবে সহযোগিতা করে এবং জেনারেল এরশাদ বিরোধী দলের আসন দখল করে । ভারত কখনো বাংলাদেশের বন্ধু ছিলো না, ভারত বন্ধু ছিলো শেখ হাসিনা এবং জেনারেল এরশাদের। বিগত ৫ আগষ্ট ২০২৪ শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে ভারত অখুশী হয়ে যায়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লিতে লোকসভার অধিবেশন ডাকে, সীমান্তে হত্যাকান্ড বৃদ্ধি করে, ফারাক্কা, তিস্তা, ত্রিপুরার বাঁধ খুলে দিয়ে কৃত্রিম বন্যায় ১০টি জেলার ২ কোটি মানষের ব্যাপক ক্ষতি করেন। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাত সিং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুমকি প্রদান করে। ভারতে ’র’ এর আশ্রয়ে আছেন শেখ হাসিনা, শেখ রেহেনা, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল। ’র’ এর সাথে যোগাযোগ আছে এমন অফিসারগণ ভারতে বাংলাদেশ দুতাবাসে চাকুরীরত আছেন, তাদেরকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় জেনারেল এরশাদের মতো কোন জেনারেল ক্ষমতা দখলের পায়তারা করতে পারে।
ভারতের আত্বস্বীকৃত দালাল জি এম কাদের ২০২৩ সালের ২৩ আগষ্ট ভারত সফর করে এসে সাংবাদিকদের সামনে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছিল, ভারতের অনুমতি ছাড়া মোদির সাথে গোপন চুক্তির কিছুই বলবে না। জি. এম কাদের, রওশন এরশাদ , মশিউর রহমান রাঙ্গা. মজিবুল হক চুন্নু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার প্রমুখ পতিত স্বৈরশাসকের সহযোগী। এস আলম, সালমান এফ রহমান, নতুন টাকা ছাপিয়ে লুটপাট, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, শেখ হাসিনার আয়না ঘরের নিরব স্বাক্ষী ইনু মেনন দ্বিলীপ বড়ুয়া এবং ১৪ দল একইসুত্রে গাতা। এরা দেশ ও জাতির দুশমন এবং র এর এজেন্ট। জাতীয় পাটি ’র’ এর পরিকল্লনা মোতাবেক বি-টিম হিসেবে ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী শাসন টিকিয়ে রেখেছিল। জাতীয় পাটির সকল নেতাদের গ্রেফতার করতে হবে। কাদের সিদ্দিকী ’র’ এর এজেন্ট। ড. মোহাম্মদ ইউনুস এর উচিত ভারতের এদেশিয় এজেন্ট এবং ’র’ এর এজেন্টদের তালিকা তৈরী করে ফলোয়াপ করা।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দেশটির সামরিক বাহিনীর শীর্ষ স্থানীয় কমান্ডারদের বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে বলেছেন। ভারতকে শান্তিপ্রিয় দেশ উল্লেখ করে রাজনাথ সিং দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে ভবিষ্যৎ যুদ্ধ মোকাবিলার জন্য তৈরি থাকতে বলেছেন। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিস্থিতির উল্লেখ করে সশস্ত্র বাহিনীকে ভবিষ্যৎ যুদ্ধ মোকাবিলার জন্য তৈরি থাকতে বলেছেন। এটি তাঁর কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য ছিল না, বরং সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডারদের যৌথ সম্মেলনের নির্দেশনা। রাজনাথ সিং এর এ বক্তব্যের জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কোন প্রতিবাদ হয়নি. মিছিল মিটিং হয় নাই। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, রাজনাথ সিংয়ের এই বক্তব্যে তিনি যতটা না উদ্বিগ্ন, তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের সংগ্রামের ফসল যে রাজনৈতিক পরিবর্তন, সে বিষয়ে ভারতের সরকারি মহলের মূল্যায়ন যে ভুল এবং বিপজ্জনক। ইউক্রেন ও গাজায় যে সংঘাত চলছে, তা বিদেশি শক্তির আগ্রাসন ও দখলদারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
বাংলাদেশে কোনো আগ্রাসন, দখলদারি কিংবা যুদ্ধে লিপ্ত নয়। ভারত ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বা গাজায় ইসরায়েলের দখলদারি বজায় রাখার গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান না নেওয়ার যে নীতি অনুসরণ করছে, তার পটভূমিতে বাংলাদেশ কোনোভাবেই প্রাসঙ্গিক নয়। বাংলাদেশে যা ঘটেছে, তা পুরোটাই আমাদের অভ্যন্তরীণ এবং গণতন্ত্রের, অভ্যন্তরীন রাজনীতির বিষয়, যাতে গণ-অভ্যুত্থানে একজন ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসকের পতন ঘটেছে। এতে কোনো তৃতীয় রাষ্ট্র বা পক্ষের দৃশ্যমান ভূমিকা ১৫ বছর ধরে পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে তাঁর অগণতান্ত্রিক ও নিপীড়নমূলক শাসনকে ভারত প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে এসেছে। ৫ আগষ্ট গণ-আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করলে ভারত তাঁকে আশ্রয় দিয়েছে। উপরন্তু ভারত এখনো খোলাসা করেনি যে এ আশ্রয় সাময়িক, নাকি স্থায়ী রাজনৈতিক আশ্রয়।
ভারত প্রতিবেশীদের স্বাধীন-স্বতন্ত্র পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণকে পছন্দ করে না। প্রতিবেশীদের প্রতি ভারতের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি শুধু রাজনৈতিক মিত্র বাছাইয়ের মধ্যেই যে সীমাবদ্ধ থেকেছে তা নয়, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রায় সব ক্ষেত্রেই এর প্রতিফলন ঘটেছে বড়ভাইসুলভ আচরণ। অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, অভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদের উন্নয়ন, সুরক্ষা ও সুফল ভোগ, বাণিজ্য, উন্নয়ন সহায়তা, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়ের মতো মানবিক সংকট মোকাবিলা এবং বৈশ্বিক পরিসরে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলোতে ন্যায্যতা ও সমমর্যাদার প্রশ্ন এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথিত ‘সবার আগে প্রতিবেশী’ (নেই বারহুড ফার্স্ট) যে শুধু রাজনৈতিক বুলি ছিল, তার প্রমাণ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের হতাশাজনক চিত্রে পাওয়া যায়। মাত্র মাস তিনেক আগে ভারতীয় সাংবাদিক জয়ন্ত রায় চৌধুরী ফ্রি প্রেস জার্নালে যা লিখেছেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক সময়ের স্রোতে বরফের রূপ নিয়েছে; নেপাল শুধু চীনের দিকেই ঝুঁকেছে, তা নয়; মানচিত্রও নতুন করে প্রকাশ করেছে এবং ভুটান চীনের সঙ্গে বৈরিতা এড়াতে এতই উদ্গ্রীব যে বেইজিংয়ের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির আলোচনায় তারা ব্যস্ত। উপমহাদেশে ভারতের প্রতিবেশী সকল রাস্ট্র ভারতের শত্রু রাষ্ট্র। ভারতের বড়ভাইসুলভ আচরনের কারণে পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, আফগানিস্থান এবং বাংলাদেশ ভারতকে বন্ধু রাস্ট্র মনে করে না।
বাংলাদেশে বিগত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদ টিকিয়ে রেখেছিল ভারত। ভারতে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা থেকে আদায় করেছে বিনাপয়সায় করিডোর, আকাশ পথ, স্থলপথ, বিমান পথ এবং রেলপথ। শেখ হাসিনা করদরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লেন্দুপ দজির ভুমিকা পালন করেছিল। শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘ভারতকে যা দিয়েছি, তারা তা সারা জীবন মনে রাখবে’ বলে ২০১৮ সালের মে মাসে শেখ হাসিনা যে মন্তব্য করেছিলেন, তাতে যথাযথ প্রতিদান না পাওয়ার হতাশার প্রতিফলন ছিল। কিন্তু ভারত হয় সে হতাশার গভীরতা ও ব্যাপকতা বুঝতে পারেনি, নয়তো তারা অনুমান করেছিল যে ব্যক্তি শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে আশ্রয় দেওয়াই হবে তাদের প্রতিদান।
২০১৫ সালে নেপালের প্রতি রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির জন্য ভারত যে অর্থনৈতিক অবরোধ দিয়ে ছয় মাস দেশটির প্রতি অবিচার করেছিল, তা নেপালের সাধারণ মানুষ কয়েক প্রজন্মেও ভুলবে না । মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু মোদির শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলেও ভারতকে তার কয়েক ডজন সৈন্য ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করেছেন। শ্রীলঙ্কাকে ভারত তার অর্থনীতি ভেঙে পড়ার মুখে ঋণ দিয়ে সহায়তা করলেও চীনের বিপুল ঋণ পুন:তফসিলকরণের প্রয়োজনে দেশটি যে ভারতকে একতরফা সুবিধা দেবে না, তা মোটামুটি নিশ্চিত করেই বলা যায়। সোজা কথায়, দক্ষিণ এশিয়ায় কথিত লৌহমানবী শেখ হাসিনার সুবাদেই বাংলাদেশে ভারত তার প্রভাব ক্রমেই বাড়িয়েছে ও সংহত করার চেষ্টা করেছে। স্বৈরশাসক যার বন্ধু হয়, নিপীড়িত জনগণ যে তার বন্ধু হয় না, এই স্বতঃসিদ্ধ বাস্তবতা দিল্লির নীতিনির্ধারকেরা ভুলে গিয়েছিলেন।
ভারতকে দেওয়ার তালিকা অনেক দীর্ঘ, বিপরীতে পাওয়ার তালিকা শুধু সংক্ষিপ্তই নয়, বরং তাতে অনেক ক্ষেত্রেই ন্যায্যতা অনুপস্থিত। তিন তিনটি কারসাজি ও প্রতারণামূলক নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করা ভারতের সমর্থন ও ক্ষেত্রবিশেষে সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া যে কখনোই সম্ভব ছিল না, তা এখন প্রায় সর্বজনস্বীকৃত। অর্থাৎ প্রতিদান দেশের জন্য নয়, ব্যক্তির জন্য ছিল। দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তসংযোগ বা কানেকটিভিটি খুবই আলোচিত এবং কিছুটা সমাদৃত শব্দ। সড়ক, রেল ও নৌপথে সংযোগ বাড়ানো, অন্য কথায় ঐতিহাসিক সংযোগ পুনরুজ্জীবনে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যাতে কার্যত একতরফাভাবে লাভবান হয়েছে ভারত। পাশাপাশি জ্বালানি খাতকেও কথিত সংযোগের জালে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ফলে প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতির বদলে ভারতের ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ শিল্পগোষ্ঠী আদানির সঙ্গে অবিশ্বাস্য শর্তে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ক্রয়ের চুক্তি হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরাও বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন রেখেছেন, কীভাবে বাংলাদেশ নিজেদের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করতে পারে? বড় প্রতিবেশীর সঙ্গে ক্রমবর্ধমান অসম বাণিজ্যের সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে জ্বালানি খাতের লেনদেনেও বড় বোঝা। জ্বালানি তেল আমদানির পাইপলাইন বসিয়ে এবং ভাসমান এলএনজি প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের ওপর জ্বালানিনির্ভরতা বাড়ানো হয়েছে। শুধু বিদ্যুতেই এখন ভারতের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা চাহিদার পাঁচ ভাগের এক ভাগ। নেপালের জ্বালানি অবরোধের অভিজ্ঞতা বলে এমন নির্ভরতা জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও বিপজ্জনক। অথচ বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের নিজস্ব সামর্থ্যের প্রায় ৪০ শতাংশ অব্যবহৃত অবস্থায় থাকছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারতের সঙ্গে সংঘাতের আশঙ্কা দেখছেন না। কিন্তু তথ্যযুদ্ধ ও সীমান্তে নিরীহ নাগরিকদের প্রাণহানির সুরাহা হবে কীভাবে, তা জানা প্রয়োজন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে স্বৈরশাসকের পতনকে ইসলামি মৌলবাদী এবং যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র হিসেবে উপর্যুপরি চিত্রায়ণ ১৭ কোটি বাংলাদেশির গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার অবমাননা। ভারতের মূলধারার গণমাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার সম্পর্কে অব্যাহত তথ্যবিকৃতি ও অপপ্রচার ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত উত্তেজনা তৈরি করছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার প্রশ্নে ভারতে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করা হলেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে গত কদিনে যে দুজন বাংলাদেশি স্বর্ণা দাস ও জয়ন্ত কুমার সিংহ নিহত হলো, তারা কিন্তু হিন্দুধর্মেই বিশ্বাসী ছিল। বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান পরিষদ এবং হিন্দু মহাজোট এবং সুশীল সমাজ কোন প্রতিবাদ করে নাই।
ভরতে ’র’ এর আশ্রয়ে আছেন শেখ হাসিনা, শেখ রেহেনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল। বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে ’র’এর সাথে যোগাযোগ আছে এমন অফিসারগণ বাংলাদেশের বিভিন্ন দুতাবাসে চাকুরীরত আছেন, তাদেরকে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় জেনারেল এরশাদের মতো উচ্চবিলাশী জেনারেলগং বাংলাদেশের বিপ্লবকে নস্যাৎ করার জন্য ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করতে পারে। ভারতের আত্বস্বীকৃত দালাল জি এম কাদের, রওশন এরশাদ , মশিউর রহমান রাঙ্গা. মজিবুল হক চুন্নু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার, কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ পতিত স্বৈরশাসকের সহযোগী। এস আলম, সালমান এফ রহমান, নতুন টাকা ছাপিয়ে লুটপাট, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, শেখ হাসিনার আয়না ঘরের নিরবস্বাক্ষী ইনু মেনন দ্বিলীপ বড়ুয়া এবং ১৪ দল একইসুত্রে গাঁথা। এরা দেশ ও জাতির দুশমন।
জাতীয় পার্টি ভারতে ’র’ এর পরিকল্পপনা মোতাবেক বি-টিম হিসেবে ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী শাসন টিকিয়ে রেখেছিল। জাতীয় পাটি এবং ১৪ দলের সকল নেতা, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের দালাল চক্রদেরকে গ্রেফতার করতে হবে। ড. মোহাম্মদ ইউনুস এর উচিত ভারতের এদেশিয় এজেন্ট এবং ’র’ এর এজেন্টদের তালিকা তৈরী করে ফলোয়াপ করা। আয়নাঘরের মাস্টারমাইন্ড ভারতীয় র এবং গুমখুনের প্রেতাত্মা ডিজিএফআইয়ের অফিসারদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। র এর পরিকল্পনায় ২০০৯ সালে পিলখানায় ৫৭ জন সেনাবাহিনী অফিসার হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। ভারতীয় আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য ২৫ লক্ষ নাগরিকদের আধা সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বিজিবি এর নাম বিডিআর করে ভারতের আগ্রাসন মোকাবিলার উপযোগী ১০০,০০০ দেশপ্রেমিক বিডিআর নিয়োগ দিতে হবে।
লেখক : গবেষক ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ।