fenirshomoy logo black

নিজস্ব প্রতিনিধি :

সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন একমাত্র নারী প্রার্থী পারভীন আক্তার। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য হাজী রহিম উল্যাহর স্ত্রী। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে এ উপজেলায় পাঁচজন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। রবিবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আগামী ১২ মে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ওইদিন কেউ নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে পাঁচজন প্রার্থীই চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনী মাঠে লড়বেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভূঁঞা) আসন থেকে পারভীন আক্তার ও তার স্বামী সাবেক সংসদ সদস্য হাজী রহিম উল্যাহ আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এই আসনে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা ও বায়রার সভাপতি আবুল বাশারকে। কিন্তু পরে দলীয় সিদ্ধান্তে আসনটি শরীকদল জাতীয়পার্টিকে ছেড়ে দেয়ায় শেষ পর্যন্ত আবুল বাশার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। পরে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজন সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হিসেবে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাচাইকালে পারভীন আক্তারের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে লড়ে যান তাঁর স্বামী রহিম উল্যাহ। কিন্তু রহিম উল্যাহ ভোটে জাতীয়পার্টির প্রার্থী লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর কাছে হেরে যান। এবার আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠেয় সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পারভীন আক্তার চেয়ারম্যান পদে একমাত্র নারী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ নির্বাচনে পারভীন আক্তারের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুর আলম মিষ্টার, জাতীয়পার্টির প্রার্থী মজিবুল হক ও মহিউদ্দিন। আগামী ১৩ মে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ দেয়া হবে।
পৌরসভার চর গনেশ গ্রামের ভোটার ফাতেমা খাতুন বলেন, চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে জাতীয়পার্টির প্রার্থী ছাড়া বাকীরা সবাই একই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। তবে শেষ পর্যন্ত লিপটনের সঙ্গে পারভীন আক্তারের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।

উপজেলার সোনাপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষিকা নাছিমা আক্তার বলেন, ‘পারভীন আক্তার দীর্ঘদিন ধরে সৌদিআরবে রাজনীতি করেছেন। গত সংসদ নির্বাচন থেকে তিনি স্থানীয়ভাবে স্বামীর পক্ষের ভোট চেয়ে মাঠঘাট চষে বেড়িয়েছেন। তাকে এখন সবাই চিনে। আমরা তাকে ভোট দেব।’ তিনি এলাকায় রাজনীতিতে তেমন একটা সক্রিয় না হলেও দুখে-সুখে সব সময় অসহায়-গরীব ও এলাকার লোকজনের পাশে থেকে সহায়তা করে আসছেন।

তবে ভোটের মাঠে জহির উদ্দিন মাহমুদ ও পারভীন আক্তার দুজনই এগিয়ে আছেন বলে মন্তব্য করেন সুজাপুর গ্রামের ভোটার আবু বকর।

পারভীন আক্তার বলেন, ‘তার স্বামী সাবেক সংসদ সদস্য হাজী রহিম উল্যাহর পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি জেদ্দা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনিও সেখানে মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তারা দুজন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। না পেয়ে আবার দুজন স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি সবসময় সোনাগাজীবাসীর সঙ্গে আছেন। আমাকে মানুষ সব সময়ই কাছে পান। কোনো ষড়যন্ত্র আমাকে হারাতে পারবে না। শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।’

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে তিনি কোন অপশক্তির কাছে হার মানবেন না। তিনি নির্বাচিত হলে সবাইকে নিয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন। এছাড়া নারীর ক্ষমতায় নিশ্চিত করে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাবেন।

হাজী রহিম উল্যাহ বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি কোন অপশক্তির কাছে মাথানত না করায় তাকে হারিয়ে দেয়া হয়েছে। সন্ত্রাসীরা ভোটারদেরকে কেন্দ্র যেতে দেয়নি। এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তার স্ত্রী প্রার্থী হয়েছে। দল থেকে যেহেতু কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তাই কোন অপশক্তির কাছে মাথানত না করে শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থেকে স্ত্রীকে বিজয় করবেন। তিনি সকল ভোটারের কাছে তাঁর স্ত্রীর জন্য দোয়া ও ভোট চান।

সোনাগাজী উপজেলায় ভোটার ২ লাখ ৪৪ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ১৯ হাজার ১৬৮ জন ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৩৭ জন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!