অনলাইন ডেস্কঃ
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পূর্বাভাস থাকায় দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলা ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা’ হিসেবে বিবেচনা করে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে সরকার।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেছেন, ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার সব ধরনের প্রস্তুতি সরকার নিয়ে ফেলেছে।
“সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। ইতোমধ্যেই সাইক্লোন শেল্টারগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রত্যেক জেলার জন্য ১০০০ প্যাকেট করে শুকনো খাবার, ২৫ মেট্রিক টন চাল ও পাঁচ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে।”
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশ উপকূল থেকে মোটামুটি সাতশ কিলোমিটার দূরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি রোববার রাতেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। তখন এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে ‘সিত্রাং’। এই নাম থাইল্যান্ডের দেওয়া।
ভারতীয় আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, বর্তমান প্রবণতা বজায় থাকলে সেই ঘূর্ণিঝড় মঙ্গলবার ভোরের দিকে বরিশাল বিভাগের তিনকোনা দ্বীপ ও চট্টগ্রাম বিভাগের সন্দ্বীপের কাছ দিয়ে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
নিম্নচাপের প্রভাবে সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে।
সেই সঙ্গে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি এবং জোয়ারের সময় উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান সরকারের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে যেভাবে ‘ম্যাপিং’ করা হয়েছে, তাতে কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা, এই বিস্তৃত এলাকার ৭৩০ কিলোমিটার জুড়ে এ ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে।
“এই ঘূর্ণিঝড়ের ব্যপ্তি অনেক বেশি, কিন্তু ঘূর্ণিঝড়টি অতটা তীব্র নয়। আমরা ধারণা করছি, গত তিন বছরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ব্যাপক বিস্তৃত এলাকায় আঘাত হানবে। উপকূলীয় ১৯টি জেলাকে আমরা ঘূর্ণিঝড় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করছি।”
জেলাগুলো হচ্ছে- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, পিরোজপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও শরীয়তপুর।