মো: মহিউদ্দিন, পরশুরাম:
পরশুরামে কবি শামসুন নাহার মাহমুদ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শিরীন আখতার। রবিবার এ উপলক্ষ্যে তিনি মতবিনিময় সভা করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা শামসাদ বেগমের সভাপতিত্বে ও বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলার সহকারী প্রোগ্রামার আইসিটি অধিদপ্তর মো: এমরান হোসেন, প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মহি উদ্দিন আহমেদ, জাসদ সভাপতি মোশাররফ হোসেন মশা। এছাড়া বিভিন্ন রাজনীতিক নেতৃবন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাগত বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এ প্রতিষ্ঠান ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও বৈষম্যতার কারণে আজ পর্যন্ত জাতীয়করণ করা হয়নি। পরশুরামে বালকদের স্কুল জাতীয়করন করা হলেও আমাদের স্কুল সকল নিয়মকানুনে এগিয়ে থাকলেও জাতীয়করণ করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই সকল বৈষম্য দূর করে আমাদের এই প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করন করা হোক। সবকিছু ছাড়াও আমরা প্রতি বছরে ফলাফলে এগিয়ে আছি।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস আঁখি, ইংরেজিতে বক্তব্য রাখেন নবম শ্রেণির ছাত্রী নুজহাত তাবাসসুম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি শিরীন আখতার বলেন, কবি শামসুন নাহার মাহমুদ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে আমি বক্তব্য দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। কারণ সবাই আমার মেয়ে। আমাদের যদি একটি হলরুম থাকতো তাহলে ভালো হতো। আমার বোনেরা সবাই কথা বলো। তোমাদের দাবী কি? অনেক দিন পরে আমি এই স্কুল কর্মসূচীতে এসেছি। এর আগে আরো একবার এসেছিলাম। এই প্রতিষ্ঠানটি যার নামে করা হয়েছে। তিনি হলেন কবি শামসুন নাহার মাহমুদ। অনেক বড়ো মনের অধিকারী। তিনিও নারীদের জন্য সারাজীবন কাজ করে গেছেন। আমরা সবাই এক রুমে বসতে পারতাম। কিছুক্ষন আগে যারা বক্তব্য দিয়েছে সবার একটি দাবী এই প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করন করা হোক। আমি মনে করি তোমরা সবদিক দিয়ে ভালো আছো। এখানে কেউই কি আছো নির্যাতিত হয়েছে, মাঠে-ঘাটে, আসা-যাওয়ার সময় নির্যাতিত হয়েছে। তা আমাকে বলতে হবে না। তোমরা নিজেকে বল। আমি মনে করি তোমরা সবকিছুতে ভালো। পর্দা শুধু পোশাকে হলে হবে না। পর্দা সবার মনের ভিতরেও হতে হবে। মন থেকে যদি পর্দা রাখতে না পারো কেউই শান্তিতে থাকতে পারবনা। সেই সোনাগাজী নুসরাততের দিকে তাকাও পর্দা থাকার পরেও জালেমের কারণে শেষ পর্যন্ত জীবন রক্ষা পায়নি।
জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন বলেন, আমরা লড়াই করে বাঁচতে চাই। কোনো বৈষম্য মানতে চাই না। কোনো বৈষম্য আমরা মানতে পারবো না। আগে হোক বা পরে হোক আমারা এই স্কুল জাতীয়করণ চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তোমাদের সুন্দর সুন্দর মুখ, ভালো চেহারা, ভালো ফলাফল, এতো চমৎকার মিষ্টি কথা, আরও বলবো সেই প্রত্যন্ত বর্ডারে থাকা আমার মেয়েরা প্রতিবছর ভালো ফলাফল করছে। তাদের এই প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, ভালো থাকতে হলে নিজেকে ভালো বাসতে হবে। কোনো দুঃখ পেলে মা-বাবাকে বলতে হবে। তাহলে মন হালকা হয়ে যাবে। তা না হলে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করতে মনে চাইবে। আত্ম হত্যা মহাপাপ। জীবন আমাদের সম্পদ। তা রক্ষা করতেই হবে। এই দুনিয়ায় নিজের জীবন ছাড়া আর কোনো আপন সম্পদ নেই। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখ তুমি অনেক সুন্দর। আত্মশক্তি দিয়ে নিজেকে ভালোবাসো। তাহলে জীবনে অনেক বড়ো হবে। বাংলাদেশে অনেক বৈষম্য দূর হয়েছে। দেখ ইউএনও, এসিল্যান্ড, ডিসি, এডিসি, সচিব সবস্থানে মেয়েরা স্থান পাচ্ছে। আমি মনে করি ভবিষ্যতে আরো বৈষম্য দূর হবে। তোমরা অনেক এগিয়ে যাবে আমি আশা করি।