নিজস্ব প্রতিনিধি :
নির্বাচনে জয়ের পর সংসদ সদস্যরা যখন ফুল নেয়া আর সংবর্ধণা নিতে ব্যস্ত তখন নির্বাচনী এলাকা তথা ফেনীর উন্নয়ন-অগ্রগতি নিয়ে চিন্তায় মগ্ন ফেনী-১ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী নাসিম। শুক্রবার পরশুরাম পৌর শহরের নির্বাচনী কার্যালয়ে এক সভায় আগামী ৫ বছর কর্মব্যপ্তির কথা শোনালেন তিনি। ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ওই সভায় তার পরিকল্পনার মধ্যে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন তদারকী করতে অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মজিবুল হক খন্দকার শাহীনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নাসিম চৌধুরী বলেন, ফেনী-১ আসনটি দেশে ভিআইপি আসন হিসেবে পরিচিত থাকলেও মানুষজন বিগত বছরগুলোতে সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্ছিত হয়েছিলেন। এজন্য প্রথম পরিকল্পনা হিসেবে প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর দক্ষতায় প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তিন উপজেলায় টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার দ্রুত প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। এর পাশাপাশি প্রতি ইউনিয়নে কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হবে। যেখানে প্রতি ব্যাচে ৩০ জন চারমাসের কোর্স সম্পন্ন করবে। জনগণকে এই প্রশিক্ষণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। প্রশিক্ষণ গ্রহণে এবং প্রশিক্ষিত হয়ে কর্মে নিজেদের নিয়োজিত করতে হবে। এতে বছরে ৫০০ দক্ষ প্রযুক্তিকর্মী তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, উন্নয়ন এবং শান্তি দুটা অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। মানুষ উন্নয়নও চায়, শান্তিপূর্ণ জীবনও চায়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ থাকাটা চিরাচরিত সংস্কৃতির অংশ। সমন্বিতভাবে উন্নয়ন করতে চাই। বিচ্ছিন্নভাবে উন্নয়ন হলে কোন একটা এলাকা অগ্রাধিকার পায়, কোন একটা এলাকা কম পায়। ৭৫ শতাংশের মধ্যে ৫২ শতাংশের বেশি ভোট আমরা পেয়েছি। এ বিশাল সমর্থনের মধ্য দিয়ে জনগন প্রত্যাশা ও দায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। এ কারনে দল, দেশ ও নির্বাচনী এলাকার প্রতি আমার দায়িত্ব রয়েছে। আমি উন্নয়নের ক্ষেত্রে সুষম বন্টন করতে চাই।
পরশুরাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন মজুমদারের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ সফিকুল হোসেন মহিমের পরিচালনায় সভায় মজিবুল হক খন্দকার শাহীন ছাড়াও বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি খায়রুল বশর মজুমদার তপন, আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য জালাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী পাপ্পু, জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি শেখ আবদুল্লাহ, সদস্য মিজানুর রহমান মজুমদার, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সভাপতি আবদুল আলিম মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার, ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, দরবারপুর ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন মজুমদার, পাঠাননগর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল হায়দার চৌধুরী জুয়েল, মির্জানগর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টু প্রমুখ।
ফেনীতে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে চলছে উল্লেখ করে নাসিম চৌধুরী বলেন, ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য সচিবের সাথে আলাপ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলা শুরু করেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে প্রয়োজন। খুব তাড়াতাড়ি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে কথা বলে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবো। ওমরাহ শেষে দেশে ফেরার পর প্রক্রিয়া শুরু করবো।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৭৩১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুততর সময়ে প্রকল্প একনেক এ উত্থাপিত হবে।
মন্ত্রীত্ব না পাওয়া প্রসঙ্গে নাসিম চৌধুরী বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্ত। তিনি যাকে যেখানে যোগ্য মনে করবেন সেখানে নিযুক্ত করবেন।