নিজস্ব প্রতিনিধি :
সীতাকুন্ড উপজেলার সোনাইছড়ি বিএম কন্টেইনার ডিপোতে শনিবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন শেষে কোয়ার্টারে বিশ্রাম নেন। সহকর্মীদের ফোন পেয়ে অগ্নিকান্ডস্থলে ছুটে যান। এসময় বাড়িতে ফোন করে ডিপোতে আগুন লাগার খবর বাবাকে জানান তিনি। ছেলের ভিডিও কলে আগুনের ভয়াবহতাও দেখেন বাবা। একপর্যায়ে বিস্ফোরণে অন্যদের সাথে প্রাণ হারিয়েছেন শাহাদাত উল্যাহ মজুমদার। তার বাড়ি ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের উত্তর আনন্দপুর এলাকায়। গতকাল রবিবার রাতে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, দুই ভাই এক বোনের সংসারে শাহাদাত মেঝ। পড়াশোনা করে আয়ের আশায় ওমান পাড়ি জমান। প্রায় ৩ বছর পর দেশে ফিরে সীতাকুন্ড বিএম কন্টেইনার ডিপোতে শিফট ইনচার্জের চাকুরী নেন। প্রায় দেড় বছর আগে বিয়ে করা শাহাদাতের তিন মাস বয়সী কন্যা সন্তান আয়েশা বিনতে শাহাদাত। ছোট ভাই আতিক উল্যাহ মজুমদার শুভ ফেনী কম্পিউটার ইনস্টিটিউটে টেলিকমিউনিকেশনে অধ্যায়নরত। স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা, ভাই নিয়ে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু হঠাৎ এক ট্রাজেডি সব যেন এলোমেলো করে দিয়েছে।
ঘটনার দিন তিনি দুইদিনের ছুটি শেষে বাড়ি থেকে সীতাকুন্ড যান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। সীতাকুন্ডে বিষ্ফোরণে অন্য সবার মতো তার পরিবারে মূহুর্তে সব যেন শেষ হয়ে যায় তার পরিবারের। এখানেই থেমে যায় শাহাদাত উল্যাহ মজুমদারের জীবনযুদ্ধ।
নিহত শাহাদাতের চাচাতো ভাই সাজ্জাদ ছিদ্দিকী মজুমদার হৃদয় জানান, তার চাচা দুলাল মজুমদার ও চাচি দীর্ঘদিন অসুস্থ। চাচাতো ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে তিনিও কর্মস্থল থেকে বাড়িতে ছুটে এসেছেন। পরিবারের আহাজারীতে এলাকার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। তার মৃত্যুর খবরে এলাকার লোকজন তার বাড়ীতে ভীড় জমায়।
হৃদয় আরো জানান, রাতে শাহাদাতের কাছ থেকে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে তার পরিবার। আর যোগাযোগ করতে না পেরে তার মামা চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট কলেজের প্রফেসর দিদারুল আলম মজুমদারকে জানানো হয়। তিনি রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান। হাসপাতালে হাসপাতালে ছুটে বেড়িয়ে ভাগিনাকে খুঁজে বেড়ান। সকালে শাহাদাতের লাশ সনাক্ত করেন তার মামা ও ছোট ভাই।