নিজস্ব প্রতিনিধি :
ফেনীতেও ডিমের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। গত ক’দিনের ব্যবধানে খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে হাঁসের ডিমের দাম হালিতে ১৫ থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া মুরগির ডিমের দাম প্রতি হালিতে ১০ থেকে ১২ টাকা বেড়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পরিবহন, শ্রমিকের মজুরী ও উৎপাদন খরচ বাড়ার অজুহাতে ডিমের দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ী ও খামারিরা।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, মুরগির ডিম এক সপ্তাহ আগে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি হালি ৩৬ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এখন সেই ডিম পাইকারি পর্যায়ে প্রতি হালি ৪৪ টাকা এবং গ্রামের মুদি দোকানে খুচরা পর্যায়ে ৫৫ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের ডিম খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা দরে। গতকাল মঙ্গলবার শহরের সুলতান মাহমুদ পৌর হকার্স মার্কেটে এ চিত্র পাওয়া গেছে। গ্রামাঞ্চলের হাঁট-বাজারে ডিমের দাম আরো বেশি।
তারা আরো জানান, লেয়ার মুরগির ডিম প্রতি হালি ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি সাদা কক মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি হালি ৪৪ টাকা দরে।
জানা গেছে, গ্রামের বাজারে লেয়ার মুরগির ডিম প্রতি হালি ৫২ টাকা, সাদা ডিম ৫০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ৮০ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে।
ডিম কিনতে আসা স্কুল শিক্ষক একরামুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার তিনি প্রতি হালি ডিম কিনেছেন ৪৪ টাকা দরে। তিনদিনের মাথায় একই দোকানে ডিম কিনতে গেলে দাম চাওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা হালি।
হারুন উর রশিদ নামে এক ব্যাংকার বলেন, এক সপ্তাহ আগে তিনি এক হালি হাঁসের ডিম কিনেছেন ৫৬ টাকা হালি দরে। সেই দোকানে গিয়ে দেখেন, সেই ডিম এক লাফে ৮০ টাকা হয়েছে।
তবে দাম বাড়লেও লাভ বাড়েনি বলে দাবি করেছেন খুচরা ও পাইকারি ডিম ব্যবসায়ীরা। সুলতান মাহমুদ পৌর হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও দিহান এগ্রো ফার্মের মালিক আবুল কালাম আজাদ জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর পরিবহন খরচ বেড়েছে। এ কারণে পাইকারী বাজারে ডিমের দাম বেড়েছে। তবে দামও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে বলে তিনি জানান।
এদিকে সোনাগাজী থেকে নিজস্ব প্রতিনিধি জানান, সোনাগাজীর বাজারগুলোতে উপজেলার আমিরাবাদ, নবাবপুর, ভোরবাজার ও বগাদানা ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মুরগির খামার থেকে ডিম আসে। আমিরাবাদের খামারি ওমর ফারুক বলেন, তার খামারে প্রায় ২০ হাজার মুরগি রয়েছে। মুরগির খাদ্যসহ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারাও খরচ পোষাতে বেশি দামে ডিম বিক্রি করতে হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণে বিদ্যুৎ চলে গেলে খামারে জেনারেটর ব্যবহার করতে হচ্ছে। সোমবার তার খামার থেকে সাড়ে ১১ টাকা দরে প্রায় ১৫হাজার ডিম বিক্রি করেছেন। এরপরও তার খরচ উঠাতে কষ্ট হবে বলে তিনি দাবি করেন।
পৌরশহরের মুদিদোকানি নুরুল আলম বলেন, ডিমের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় আপাতত তিনি দোকানে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।
সোনাগাজী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নুর নবী বলেন, বাজারের প্রায় সবগুলো পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে কিছু ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্য অতিরিক্ত বাড়িয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারেন। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন।