দৈনিক ফেনীর সময়

ফেনীতে শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকরা

ফেনীতে শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকরা

নিজস্ব প্রতিনিধি :

শীতের আগাম শাকসবজি বাজারে তুলতে পারলেই অধিক টাকা উপার্জন করা যায়। তাই শীতের আগেই বাজারে শীতকালীন সবজি নামাতে ফেনীতে কৃষকদের মধ্যে সবজি চাষের ধুম পড়েছে। চারা তৈরি ও জমি পরিচর্যায় ব্যস্তসময় পার করছেন জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানায়, ফেনী জেলায় ৯৩০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬টি উপজেলার মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ৩৬৭ হেক্টর, ছাগলনাইয়া উপজেলায় ১২১ হেক্টর, ফুলগাজীতে ৪০ হেক্টর, পরশুরামে ৭১ হেক্টর, দাগনভূঞা ৯৪ হেক্টর ও সোনাগাজীতে ২৩৭ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হচ্ছে। বেগুন, মুলা, টমেটো, শিম, বরবটি, শসা, লাউ, কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করার লক্ষ্য নিয়ে কৃষকেরা মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সূত্র আরো জানায়, সোনাগাজী উপজেলায় ব্যাপকভাবে শাকসবজি চাষ হয়। সাম্প্রতিক সময়ে চাষিরা সবজি চাষ করে লাভবান হওয়ায় আগাম চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। আগাম সবজির মধ্যে মুলা, বেগুন, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, করলা, টমেটো, ঢেঁড়শ, পালংশাক, পুঁইশাক ইত্যাদি। তবে সামান্য বৃষ্টি হওয়ায় সবজি চাষ আগের চেয়ে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সোনাগাজী উপজেলার কয়েকটি গ্রামে দেখা গেছে, চাষিরা ব্যাপকভাবে শীতকালীন সবজি চাষ করছেন। তবে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে কিছুটা ছন্দপতন হয়েছে। তবুও চারা তৈরি থেকে শুরু করে আগাম শাকসবজি রোপণে ব্যস্তসময় পার করছেন চর চান্দিয়া ইউনিয়নের কৃষক আবদুর রহমান। তিনি ২০ শতক জমিতে এ বছর শীতকালীন সবজি চাষ করছেন বলে জানান।

দাগনভূঞার চাষী মো: আজিজুল হক নামের এক চাষীকে তার দুই ছেলেকে নিয়ে জমি পরিচর্যা করতে দেখা যায়। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কিছুক্ষণ পর তিনি জমির আইলে উঠে এসে জানান, তার ৪০ শতক জমি রয়েছে। পুরো জমিতেই তিনি বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন শাকসবজি চাষ করছেন। শ্রমিকের মজুরি বেশি, তাই ছেলেদের নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন।

ওমরাবাদ গ্রামের চাষি আবুল হোসেন জানান, এবার ২০ শতক জমিতে সবজি চাষ করছেন। শীতের আগে শীতকালীন সবজি বাজারে তোলা হলে তার চাহিদা বেশি থাকে। এর ফলে সেগুলোর দামও বেশি পাওয়া যায়। তিনি আশা করছেন, শীত আসার আগেই তিনি শাকসবজি বাজারে তুলতে পারবেন।

আরেক চাষি মুহাম্মদ আলী জানান, ২৬ শতক জমিতে তিনি বেগুনের চাষ করেছেন। সপ্তাহ খানেক পরেই বেগুন বিক্রি শুরু করতে পারবেন। এখন বাজারে চাহিদার পাশাপাশি দামও বেশি পাওয়া যাবে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

ফেনীস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: একরাম উদ্দিন জানান, জেলার কৃষকেরা বর্তমানে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বীজতলা তৈরি, চারা উৎপাদন, রোপণসহ পরিচর্যায় কৃষকেরা সার্বক্ষণিক কাজ করছেন।

তিনি আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হলেও কৃষকরা আগাম শীতের সবজি বাজারে আনতে নিবিড়ভাবে কাজ করে চলেছেন। কৃষি বিভাগ ও কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!