নিজস্ব প্রতিনিধি :
ফেনীতে যুবদলের সমাবেশ থেকে জেলা সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খন্দকার সহ গ্রেফতার নেতাকর্মীদের দ্রæত মুক্তি দাবী করেছেন বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। নেতারা বলেন, একের পর এক যুবদল নেতাদের টার্গেট করে গ্রেফতার করছে। তাদের সাজানো মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। ছাগলনাইয়া উপজেলা আহবায়ক জসিম উদ্দিনকে কোন মামলা ছাড়াই বিনাকারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবে দমন-পীড়ন চালিয়ে নেতাকর্মীদের আন্দোলন থেকে সরানো যাবেনা। নাসিরের মুক্তি আন্দোলনের মাধ্যমে ফেনীতে সরকার পতন আন্দোলন বেগবান হবে বলে নেতারা দাবী করেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে শহরের ইসলামপুর রোডের জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে যুব সমাবেশে বিপুল নেতাকর্মীর উপস্থিতির মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর ঐক্যবদ্ধ হয়ে শোডাউন করে তারা। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার।
তিনি বলেন, “অনেক বছর ফেনীতে কোন টেন্ডার হয় না। হাট-বাজারের ইজারা হয় না। রাস্তাঘাটের টেন্ডার হয় না। ইঞ্জিনিয়ারদের রাস্তাঘাটে দেখা যায় না। কাজ না করে বিল তুলে নেয়া হয়। গত কয়েকদিন আগে এক বাড়িতে গরু চোর ঢুকে। এলাকার মানুষ টের পেয়ে চোরেরা গাড়ী রেখে পালিয়ে যায়। ওই গাড়ী ছাড়িয়ে দিতে গরুর মালিকদের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সুপারিশ করেন। পরে পুলিশকে দিয়ে ওই গাড়ী থানায় আনা হয়। এখন সেই গাড়ী থানায় নেই। গরু চোরের স্বাধীনতা রয়েছে, একজন বিএনপি কর্মীর সেই স্বাধীনতা নেই।”
বাহার আরো বলেন, “নাসিরের মুক্তি দাবীতে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা প্রতিবাদ করতে মাঠে নেমেছে। তাকে ঢাকা থেকে ধরে এনে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। একইভাবে যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন জসিমকেও ঢাকা থেকে মিথ্যা মামলায় আটক করা হয়েছে। কিছুদিন আগে সদর উপজেলা সদস্য সচিব শাহাদাতের উপর হামলা করেছে। ১৩ বছর ধরে নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। এদেশে আবার স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলিত হবে। এটি শেখ মুজিবের স্বাধীনতা নয়, রিলিফ চুরির স্বাধীনতা নয়, কম্বল চুরির স্বাধীনতা নয়।
জেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন জসিমের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন সুমনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, যুগ্ম-আহবায়ক এম এ খালেক, গাজী হাবিব উল্যাহ মানিক, এয়াকুব নবী ও আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন কৃষক দল সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দীন খোকন, যুবদলের সহ-সভাপতি বেলাল হোসেন, হাসানুজ্জামান শাহাদাত, সিনিয়র সদস্য আতিকুর রহমান মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক নঈম উল্যাহ চৌধুরী বরাত, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রাসেল পাটোয়ারী, সিরাজুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, সহ-সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম সোহাগ, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক এসএম কায়সার এলিন, ছাত্রদলের সভাপতি সালাহউদ্দিন মামুন, সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলন, যুবদল নেতাদের মধ্যে ফেনী পৌর আহবায়ক জাহিদ হোসেন বাবলু, সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন সোহাগ, সদর উপজেলা আহবায়ক নিজাম উদ্দিন, সোনাগাজী উপজেলা আহবায়ক খুরশিদ আলম, পরশুরাম উপজেলা আহবায়ক সামছুল আলম শাকিল, দাগনভূঞা উপজেলা আহবায়ক কবির আহম্মদ ডিপলু, ফুলগাজী উপজেলা যুগ্ম-আহবায়ক নুরুল হুদা শাহীন, ফেনী পৌর যুগ্ম-আহবায়ক নুর ইসলাম, শরিফুল ইসলাম রাসেল,
সদর উপজেলা যুগ্ম-আহবায়ক ফরিদুল ইসলাম রাহাত, ফখরুল ইসলাম মাসুক, দাগনভূঞা পৌর আহবায়ক ইমাম হোসেন, পরশুরাম পৌর যুবদলের আহবায়ক মোস্তফা খোকন, সোনাগাজী পৌর আহবায়ক ইকবাল হোসেন, ছাগলনাইয়া উপজেলা যুগ্ম-আহবায়ক শাহজাহান মজুমদার আজাদ, আবদুল মমিন, পৌর যুগ্ম-আহবায়ক আলমগীর হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফরহাদ উদ্দিন চৌধুরী মিল্লাত, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী জুয়েল পাটোয়ারী, রশিদ আহমদ মজুমদার প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে সমাবেশে আসার পথে নেতাকর্মীদের পথে পথে পুলিশ ও সরকার দলীয়রা বাধা দেয়ার অভিযোগ করে তীব্র সমালোচনা করেন। তারা সরকারের অনিয়ম-দূর্ণীতি তুলে ধরে নিরপেক্ষ-নির্দলীয় তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি, যুবদল কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না ও ফেনী জেলা সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খন্দকারের মুক্তি দাবী জানান।
প্রসঙ্গত; গত ৩ মে বুধবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনের জামান টাওয়ারের সামনে থেকে নাসির উদ্দিন খন্দকারকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তিনি ৮ মামলায় ফেনী জেলা কারাগারে রয়েছেন।