নিজস্ব প্রতিনিধি :
ফেনী শহরের মহিপাল থেকে এক পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় জড়িত অপর তিন আসামীকে খুঁজছে পুলিশ। গ্রেফতার তিনজনের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। পুলিশ সুপার জাকির হাসান গতকাল সোমবার সকালে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, অপহরণে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস পিরোজপুর জেলায় অপর একটি ঘটনায় আটক হয়েছে। জড়িত অপর তিনজনকে আইনের আওতায় আনতে খোঁজা হচ্ছে।
ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অং প্রু মারমা, ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, ফেনী শহরে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু চুরি-ছিনতাই সংগঠিত হয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ করছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাঝামাঝি স্থানে হওয়ায় ফেনীতে অপরাধ করে দূর্বৃত্তরা সহজে পার হয়ে যায়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থাকলেও শনাক্ত করতে বেগ পেতে হয়। এসব ঘটনা রোধে শহরের বিভিন্ন স্থানে চেক পোষ্ট বসিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশী করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, অপহরণের শিকার দম্পতির বাড়ি ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানায় হলেও পুলিশে চাকুরীর সুবাধে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থানায় বসবাস করেন তারা। গত ২৮ আগস্ট তারা ফেনী শহরের বিরিঞ্চি এলাকার এক হুজুরের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। চিকিৎসা শেষে বিকালে চট্টগ্রামে মাজার জেয়ারতের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে যাত্রীবেশে থাকা আরো ৫ জনের সাথে একটি মাইক্রোবাসে মহিপাল থেকে উঠেন পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রী। গাড়ীটি লালপোল পৌঁছলে স্বামীর চোখ-মুখ বেঁধে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে দূর্বৃত্তরা। তাৎক্ষনিক পকেটে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকা, ৪২ হাজার টাকা মূল্যের দুটি স্যামসাং ও একটি নকিয়া মোবাইল ফোন, ৬ হাজার টাকা মূল্যের হাতঘড়ি, ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের একজোড়া কানের দুল হাতিয়ে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যকে লোহার রড় দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে আরো ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। তাদের নির্যাতনের মুখে বিকাশের মাধ্যমে আরো ৮০ হাজার টাকা এনে দেয়ার পর রাত ১০টার দিকে লালপোল এলাকায় দুইজনকে ছেড়ে দেয়া হয়। পথচারীদের সহায়তায় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে তারা ভর্তি হন। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যের স্ত্রী হনুফা বেগম বাদি হয়ে ৬ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্রেফতার তিনজন আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ৮-১০টি করে মামলা আছে।