নিজস্ব প্রতিনিধি :
শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূলীয় এলাকায় বিশেষ সর্তকতা জারি করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় সোনাগাজীতে অর্ধশত আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখাসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
দূর্যোকালীন সময়ে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানরতদের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার, চিড়া, গুড়, মুড়ি, বিস্কুট, ৫০ হাজার পানি বিশুদ্ধ করন টয়াবলেটের ব্যবস্থা করাসহ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। রেমালের প্রভাবে শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও হালকা বাতাস বইতে শুরু করেছে। দূর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি রোধে রেমালের গতিবিধি পর্যালোচনা করে রোববার সকাল থেকে চারটি ইউনিয়নের উপকূলীয় বাসিন্দাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসারও বিষয়ে প্রচারনা চালানো হবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনলাইনে (জুম মিটিং) দূর্যোগ ব্যবস্থােনা কমিটির জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা, জনপ্রতিনিধিরাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন অংশ নেন।
সভা শেষে ঘূর্ণিঝড়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যক্ষেণ করতে প্রশাসনের কর্মকর্তা, সিপিপির কর্মকর্তা, দল নেতা, স্বেচ্ছাসেবক ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে উপকূলীয় চারটি ইউনিয়ন চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, সোনাগাজী সদর ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে লোকজনের খোঁজখবর নিয়ে তাদেরকে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সচেতনতাসহ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলছেন।
দক্ষিণ পূর্ব চর চান্দিয়া এলাকার সিপিপির দল নেতা নুর নবী বলেন, শুক্রবার বিকেলে ৩নম্বর সর্তক সংকেত শুনার আগে থেকে তারা এলাকায় মাইকিং করে জনগনকে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণের প্রস্তুতি নিতে বলছেন। এছাড়া গবাদিপশু গুলোকেও নিরাপদে সরিয়ে নিতে তারা প্রচারনা চালাচ্ছেন।
চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মিলন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সর্তকবার্তা পেয়ে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে সভা করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুনি নিয়ে মাঠে কাজ করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ও দূর্যোগ মোকাবিলায় এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনাসহ জনগনকে সর্তক করার লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় সোনাগাজীতে অর্ধশত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রসহ উপজেলার সবকটি বিদ্যালয়কে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলায় একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে এবং ১৪টি চিকিৎসক দল, জনপ্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস, আনসার ও ভিডিপি এবং গ্রাম পুলিশের সদস্যরা মাঠে কাজ করবেন। দূর্যোগকালীন উদ্ধার তৎপরতাসহ বিভিন্ন কাজের জন্য সিপিপির দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ আড়াই হাজার কর্মী প্রস্তুত রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির কর্মসূচীর (সিপিপি) সহকারি পরিচালক মুনীর চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে উপজেলার সর্বত্র সিপিপির সদস্যরা কাজ করছেন। প্রতিটি এলাকায় সিপিপির সদস্যদের সহায়তায় জনগনকে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সতর্ক করে জানমাল ও গবাদিপশুর নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া বিষয়ে বলছেন। ঘূর্ণিঝড় আসায় উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা অনেকে আতঙ্কে রয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেদেরকে দূর্যোগকালীন সময়ে নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।