শহর প্রতিনিধি :
ফেনীতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে ১১১ হেক্টর জমির আমন ধানের গাছ হেলে পড়েছে। এসব জমিতে পানি জমে থাকলে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। এদিকে ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, গতকাল সোমবার রাতে সিত্রাংয়ের প্রভাবে বিদ্যুতের তার ছিড়ে যাওয়া, তারের উপর গাছ হেলে পড়া, ট্রান্সফরমার বিকল হওয়া ও খাম্বা ভেঙ্গে পড়াসহ নানাভাবে অন্তত ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে মঙ্গলবার ও বুধবারের মধ্যেই লাইন স্বাভাবিক করার বিষয়ে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় চলতি আমন মৌসুমে ৬৬ হাজার ৭৪৮ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। তন্মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ১১১ হেক্টর জমির আমন ধান হেলে পড়েছে। এসব জমিতে পানি না সরলে কৃষকরা ক্ষতির মুখোমুখি হবেন। আক্রান্ত আমনের মাঝে ফেনী সদর উপজেলায় ২৪ হেক্টর, সোনাগাজী উপজেলায় ৬৫ হেক্টর, ছাগলনাইয়ায় ৭ হেক্টর ও ফুলগাজী, পরশুরাম এবং দাগনভূঞায় ৫ হেক্টর করে ১৫ হেক্টর জমির ধান ন্যুয়ে পড়েছে। এছাড়াও আবাদকৃত শীতকালীন শাক-সবজির জমিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফেনীস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ফেনী জেলায় ১১১ হেক্টর জমির আমন ধান ন্যুয়ে পড়েছে বলে মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য পাওয়া গেছে। বর্তমানে আমন ফসল গুলো ফ্লাওয়ার পর্যায়ে আছে। ফলে এগুলো ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সম্ভাবনা অনেক বেশি রয়েছে। জমিতে পানি জমাটবদ্ধ হয়ে থাকলে ধান গাছ পঁচে যেতে পারে। এক্ষেত্রে ন্যুয়ে পড়া ফসল বেশিরভাগ চিটা হয়ে যেতে পারে। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে।
এদিকে ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ্েযানেজার হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান জানান, ঘূণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে পল্লী বিদ্যুতের ৩৭টি খাম্বা ভেঙেছে, ৪৫৫টি স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। ৩৮৫ জন গ্রাহকের মিটার ভেঙ্গেছে। ১১টি ট্রান্সফর্মার বিকল হয়েছে। ২৫৩ স্থানে বিদ্যুৎ লাইনের উপর গাছ হেলে পড়েছে। সবমিলিয়ে জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অন্তত ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল বাতাসে পুরো জেলায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। জেলায় ৩লাখ ৮০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার গ্রাহকের লাইন সচল করা গেছে। বাকী প্রায় ৩ লাখ গ্রাহকের লাইন সচল করতে জেলাব্যাপী ১১৫টি টিম কাজ করছে।