নিজস্ব প্রতিনিধি :
সোনাগাজীর চাঞ্চল্যকর স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন চন্দ্র ভাদুড়ী হত্যার ঘাতকদের শনাক্ত করা যায়নি প্রায় দুই মাসেও। এতে নিহতের পরিবারের মাঝে ক্ষোভ, আতংক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৩০ অক্টোবর দুপুরে প্রকাশ্যে উপজেলার জমাদার বাজারে বোমা নিক্ষেপ করে আতংক ছড়িয়ে অর্জুন জুয়েলার্স দোকানের মালিক অর্জুন চন্দ্র ভাদুড়ীকে (৫২) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দোকানের শোকেস ভেঙ্গে এবং লকার খুলে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালামাল লুট করে। সশস্ত্র ডাকাতদল মোটর সাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। আহতের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে ডাকাত দল বোমা নিক্ষেপ করে। এসময় স্থানীয় কয়েকজন পথচারী আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অর্জুন ভাদুড়ীকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফেনী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করেন। অবস্থার অবনতি ঘটায় চিকিৎসক ফেনী জেনারেল হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে পাঠান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে ১১ দিন পর মৃত্যুবরণ করেন। ঘটনার ২দিন পর নিহতের জামাতা রনি বনিক বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে উপজেলার চরসাহাভিখারী গ্রামের সিরাজুল ইসলাম (৪৮), মোঃ মোস্তফা (৫০) ও বেলাল হোসেন কে (২৮) গ্রেফতার করলেও উল্লেখযোগ্য তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি। হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার জুয়েলারী সমিতি, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ মানব বন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। প্রত্যক্ষ দর্শী মানিক ভাদুড়ী জানান, ২টি মোটর সাইকেল যোগে সশস্ত্র ৬ ডাকাত দল বাজারে প্রবেশ করে। এতে ২ ডাকাত মুখোশ পরা ছিল। অপর ৪ জনের মুখে মুখোশ ছিল না। ২ জনের মাথায় হেমলেট ছিল। খবর পেয়ে র্যাব, জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে। মামলার বাদী ও নিহতের পরিবার জানান, পুলিশের কর্মকান্ড সন্তেুাষ জনক। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। জমাদার বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি সেক্রেটারি মাঈন উদ্দিন মুক্তার জানান, ঘটনাটি অমানবিক। ওইদিন তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। আহত অবস্থায় তিনি ভাদুড়িকে হাসপাতালে পৌছেদেন। পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে ডাকাতদের ছবি ফেসবুক সহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করে সন্ধান চেয়েছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার পুলিশ পরিদর্শক আবুল কাশেম জানান, ৩ জনকে গ্রেফতার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আশা করছি ঘাতক চক্রের সন্ধান পেয়ে যাবো।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি খালেদ হোসেন জানান, ঘটনার জড়িতদের শনাক্ত করার জন্য পুলিশ আপ্রাণ চেষ্টা করছে।