নিজস্ব প্রতিনিধি :
ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে আসছিল বখাটেরা। ক’দিন আগে এক ছাত্রীকে পথশিশুদের দিয়ে হেনস্থা করা হয়। বিষয়টি জেনে রবিবার স্কুলের ফটকে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফেনী সরকারি কলেজে প্রবেশ-বাহিরের সময় ছাত্রীদের সাথে এমন ঘটনা চোখে পড়ে প্রায়ই। কোর্ট বিল্ডিংয়ের অতি নিকটের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ার পথে এমন নোংরা দৃশ্য নিত্যদিনের।
শুধু শহরে নয়, এভাবে জেলা সদর সহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উপদ্রবের শিকার সববয়সী নারীরা। এসব ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। ইভটিজিংয়ের খবর পেলে ঘটনাস্থলে ছুটছেন তারা। শহরের আল-জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদরাসার এক শিক্ষার্থীকে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার মাদরাসা এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত দুই বখাটে লাপাত্তা হয়ে যায়।
গত বুধবার শহরতলীর পাঁচগাছিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইভটিজিং করায় স্থানীয় দুই ছাত্রলীগ নেতা (বহিস্কৃত) রিয়াদ হোসেন ও সাজ্জাদ হোসেন সায়েমের নামে থানায় অভিযোগ দেয় প্রধান শিক্ষক। এরপর থেকে পুলিশ তাদের হন্যে হয়ে খুঁজছে। কিশোর গ্যাংয়ের নির্মমতার শিকার হয়ে দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের নুরুল্লাহপুর এলাকার সজিব নামে এক যুবক প্রাণ হারিয়েছে। এ ঘটনার পর মূল অভিযুক্তরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এর আগেও বিভিন্ন সময় জেলায় কিশোর গ্যাংয়ের নির্যাতনের হতাহতের ঘটনা অহরহ।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, উঠতি বয়সী কিশোররা দলবদ্ধ হয়ে ইভটিজিং সহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। এদের উৎপাতে স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সহ সর্বস্তরের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। শহরের পাড়া-মহল্লার অলি-গলি এমনকি গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে গ্যাং কালচার।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ১৫-২০ জনের এসব কিশোরদের সংঘবদ্ধ দল অনেকেই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া। তাদের বেপরোয়া কর্মকান্ডে এলাকার লোকজন প্রতিবাদ করতে সাহস করেনা। কারণ হিসেবে উঠে আসছে নানা তথ্য। এসব উঠতি ছেলেদের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক কর্মকান্ডেও ব্যবহার করা হয়। আর এদের নানা অপরাধের পেছনে রয়েছে কথিত বড় ভাইদের হাত। বড় ভাইদের রয়েছে রাজনৈতিক দলের আশ্রয়-প্রশ্রয়।
জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ফেনী জেলা পুলিশের উদ্যোগে কিশোর গ্যাং ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়। গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে কাছ থেকে এলাকাভিত্তিক এসব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিশোর গ্যাং কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে ডাটাবেজ থেকে তার নামও বাদ দেয়া হবে। জেলার ৬ থানা এবং নিজ নিজ এলাকায় বীট অফিসারগণকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।