১৯৯৩ সালে আমি তখন সপ্তম শ্রেনীতে পড়ি। আমার সাথে পড়তো সেই ক্লাস ওয়ান থেকে এক সাথে পড়া বন্ধু রফিকুল ইসলাম। দুইজন খুব ক্লোজ ছিলাম। অনেক দিন ধরে রফিক স্কুলে যায় না। তাকে পাগলা কুকুর কামড়িয়ে ছিলো। শুননাল তকে ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়। ফেব্রæয়ারী / মার্চ হবে । আমরা মাঠে খেলছিলাম। এসময় রফিককে ঢাকা থেকে নিয়ে আনা হয়েছে জানলাম। মানুষ বলাবলি করছিলো ছেলেটি আর বাঁচবে না। এসব শুনে আমরা খেলা ছেড়ে দিয়ে বন্ধুরা সবাই রফিকের বাড়ির দিকে দৌড় দিলাম। গিয়ে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হলো। আমাকে দেখেই রফিক জড়িয়ে ধরলো। অনেকক্ষণ ধরেই ছাড়ছে না। ঔ সময় জেনেছি পাগলা কুকুর কামড়ালে পানি দেখলে আতংক সুষ্টি হয়। রফিককে যেদিন ঢাকা থেকে আনা হয় ঐদিন রাতেই মারা যায়। আমার খুব কাছের বন্ধু হয় জলাতংক রোগের শিকার। আজ এই রোগ নিয়েই লেখার প্রয়াস পাবো।
জলাতঙ্ক একটি ভাইরাস রোগ যা মানুষ এবং অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর মস্তিষ্কের প্রদাহ সৃষ্টি করে। বিশ্বে প্রতি ১০ মিনিটে একজন এবং প্রতিবছর প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মারা যান। বাংলাদেশেও বছরে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী মৃত্যুবরণ করেন জলাতঙ্কে। শুধু মানুষই নয়, প্রতিবছর প্রায় ২৫ হাজার গবাদিপশুও জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে থাকে দেশে।বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস বিশ্বব্যাপী জলাতঙ্ক নির্মূলে সচেতনতা তৈরির জন্য প্রতি বছর ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। এই তারিখটি বেছে নেয়া হয়েছিল কারণ এটি লুই পাস্তুরের মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি প্রথম ব্যক্তি যিনি সফলভাবে জলাতঙ্ক রোগের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন তৈরি করেছিলেন।বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবসের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বব্যাপী জলাতঙ্ক রোগের বর্তমান অবস্থা বিষয়ে পর্যালোচনা, এর প্রেক্ষিতে করণীয় বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি ও বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাধারণ জনগণ, চিকিৎসক এবং সরকারি-বেসরকারি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। এছাড়াও এই রোগ সম্পর্কে সাধারণ জনগণকে সচেতন করার জন্য এই দিনে বিনামূল্যে টিকা প্রদান কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। জলাতঙ্ক রোগের অবসান ঘটানোর একমাত্র উপায় হল একসাথে কাজ করা এবং একটি অভিন্ন লক্ষ্যের দিকে একত্রিত হওয়া।
জলাতঙ্ক রোগটি প্রায় ৪০০০ বছরের পুরাতন রোগ যার অস্তিত্ব শুধুমাত্র এন্টার্কটিকা মহাদেশ ব্যতীত সকল মহাদেশেই বর্তমান। মানুষসহ সকল উষ্ণ রক্ত বিশিষ্ট প্রাণির স্নায়ুতন্ত্রের মারাত্মক এই রোগটি জুনোটিক রোগ অর্থাৎ রোগটি প্রাণি থেকে মানুষে ছড়ায়। “রেবিজ” নামক ভাইরাস দ্বারা রোগটি হয়ে থাকে। জলাতঙ্ক আক্রান্ত মানুষ ও প্রাণির গলবিলের পেশীতে অবশতার কারণে পানি গিলতে অসুবিধাজনিত ভীতির উদ্রেক ঘটে বলে রোগটিকে বাংলায় জলাতঙ্ক এবং ইংরেজীতে ‘হাইড্রোফোবিয়া’ বলা হয়। বিশ্বের উন্নত অনেক দেশ যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে রোগটিকে শূন্য অথবা প্রায় শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসলেও এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে এ রোগের সমস্যা এখনও প্রকট। তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ প্রায়শঃই জলাতঙ্ক-কে ‘অবহেলিত রোগ’ বলে থাকেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র রিপোর্ট মতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৯৬শতাংশ মানুষে জলাতঙ্ক সংক্রমণের জন্য কুকুরই দায়ী।
অসচেতনতা, দারিদ্র্যতা, রাস্তায় উদ্বাস্তু কুকুরের সংখ্যাধিক্য এবং পোষা কুকুরের টিকা নিশ্চিতকরণে অবহেলার কারণে এই রোগটি বাংলাদেশে প্রাদুর্ভাব হিসেবে বর্তমান। জলাতঙ্কের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি, উচ্চমাত্রার স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং মৃত্যুহার বিবেচনায় পৃথিবীতে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। সম্প্রতি বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী প্রকাশক ন্যাচার গ্রæপের ‘সায়েন্টেফিক রিপোর্টে’ ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত জাতীয় জলাতাঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল কেন্দ্র খ্যাত সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের জানুয়ারী ২০০৬ থেকে ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত সময়কালের ১৩২৭ জন জলাতঙ্ক আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৪২২ জনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষিত গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত গবেষণা রিপোর্টে দেখা যায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৭০ শতাংশ পুরুষ, ৪৭ শতাংশ শিশু যাদের বয়স ১৫ বছরের কম এবং ৮২ শতাংশ রোগী গ্রামে ছিলেন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শতকরা ৯০ জন কুকুর দ্বারা সংক্রমিত ছিলেন এবং বিড়াল, শেয়াল ও বেঁজী দ্বারা সংক্রমিত ছিলেন শতকরা ৬, ৩ ও ১ জন। এদের মধ্যে ৭৮শতাংশ রোগী প্রাণির কামড় বা আঁচড়ের শিকারের পর ঝাড়ফুঁকের জন্য ওঝা, ফকির, কবিরাজ ও গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। অর্থাৎ, যারা কামড় পরবর্তী কোন ব্যবস্থা এবং প্রতিষেধক নেননি। আক্রান্তদের মাত্র ১২শতাংশ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে প্রতিষেধক নিলেও তাদের বেশিরভাগই টিকার কোর্স সম্পন্ন করেননি। এছাড়া গবেষণা রিপোর্ট ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশে জলাতঙ্ক রোগের জন্য (মানুষের ক্ষেত্রে) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী ‘নার্ভ টিস্যু টিকা’র পরিবর্তে ‘আধুনিক টিস্যু কালচার টিকা’ ব্যবহার এবং একই সাথে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রত্যক্ষ সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল অপারেশন প্ল্যানের অধীনে ব্যাপকহারে কুকুর টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রকাশিত গবেষণাটি নিশ্চিত করেছে যে কার্যক্রম বাংলাদেশে জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। ২০১০ সালের পূর্বে প্রতি বছর প্রায় ২৫০০ মানুষ জলাতঙ্ক রোগে প্রাণ হারাতো যা বর্তমানে কমে প্রায় ২০০ শতের কাছাকাছি এসেছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে প্রতি বছর জলাতঙ্ক আক্রান্ত গবাদি পশুর আনুমানিক সংখ্যা ২৫ হাজার যার অর্থনৈতিক মূল্য অপরিসীম।
রেবিজ ভাইরাসের সুপ্তাবস্থা কামড় স্থানের উপর ভিত্তি করে দুই থেকে ষোল সপ্তাহ বা আরো বেশি হতে পারে। পায়ের তুলনায় মাথার দিকে কামড়ালে সুপ্তিকাল আরো কমে যায় কারণ ভাইরাসের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে পৌঁছাতে সময় কম লাগে। প্রথমদিকে অনির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ যেমন জ্বর, ক্ষুধামন্দা, কামড় স্থানের অনুভূতিতে পরিবর্তন যেমন চিনচিন, ঝিনঝিন ইত্যাদি পরিলক্ষিত হয়। কয়েকদিন পর থেকে তন্দ্রা, কনফিউশন, অনিয়ন্ত্রিত উত্তেজনা, লালারসের ক্ষরণ বৃদ্ধি প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়। সবচেয়ে লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে ঢোক গিলার সময় ডায়াফ্রাম, রেসপিরেটোরি মাসল ও কণ্ঠনালির তীব্র ব্যথাযুক্ত সংকোচন হয় বিশেষ করে পানি পান করার চেষ্টা করলে ডায়াফ্রাম ও অন্যান্য ইন্সপিরেটোরি মাসলের তীব্র সংকোচন ও ব্যথা হয় ফলে রোগীর মধ্য হাইড্রোফোবিয়া বা পানভীতি তৈরি হয়। এই অবস্থার জন্য বাংলায় এই রোগকে জলাতঙ্ক নামে অভিহিত করা হয়। এছাড়া রোগীর ডিলিউসন, হ্যালুসিনেশন ও পাগলামি, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নাড়ানোর অক্ষমতা, চেতনাশূন্যতা দেখা দেয়।
এই ভাইরাস সাধারণত রেবিজ দ্বারা আক্রান্ত প্রাণীর কামড় বা আঁচড় ও লালার মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। রেবিজ ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত প্রাণীর ভাইরাল এনসেফালাইটিস হয় ফলে প্রাণীটি আক্রমণাত্মক হয়ে যায় এবং অল্পতেই কামড়িয়ে দেয়। এই ধরনের প্রাণীকে রেবিড প্রাণী বলে। এই ভাইরাস প্রায় সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীকেই আক্রান্ত করতে পারে। তবে খুব অল্পসংখ্যক স্তন্যপায়ী মানুষের সংক্রমণের উৎস হিসেবে গুরুত্ব বহন করে। মানুষ সাধারণত কুকুরের কামড়ের মাধ্যমে বেশি আক্রান্ত হয়। অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে বিড়াল, বাদুড়, ভোঁদড়, শেয়াল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সাধারণত খরগোশ ও তীক্ষèদন্তী প্রাণী যেমন, ইঁদুর, মূষিক, কাঠবিড়াল প্রভৃতির মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায় না। সাধারণত মানুষ থেকে মানুষে অঙ্গ ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। যেহেতু বীর্য বা স্ত্রীযোনির তরলে ভাইরাস থাকতে পারে তাই তত্ত¡ীয়ভাবে যৌনমিলনের মাধ্যমে ছড়ানোর সম্ভাবনা আছে।
সাধারণত রোগের ইতিহাস ও উপসর্গের উপর ভিত্তি করে রোগ নির্ণয় করা হয় তবে কর্নিয়াল ইম্প্রেশন স্মিয়ার ও স্কিন বায়োপসি থেকে র্যাপিড ইমিউনোফ্লুরেসেন্ট কেনিকের মাধ্যমে অ্যান্টিজেন শনাক্ত করা সম্ভব। এই রোগের টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। রেবিড প্রাণী কামড় দেয়ার সাথে সাথে দ্রæত সময়ের মধ্যে টিকা নিলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এই ভাইরাসের অনেকরকম টিকা আবিষ্কার হয়েছে। তবে সবচেয়ে নিরাপদ টিকা হলো হিউম্যান ডিপ্লয়েড সেল ভ্যাকসিন। অন্যান্য টিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পিউরিফাইড চিক ইমব্রিও সেল ভ্যাকসিন, ডাক ইমব্রিও সেল ভ্যাকসিন, নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন ইত্যাদি। ডাক সেল ভ্যাকসিনের ইমিউনোজেনেসিটি বা কার্যকারিতা কম এবং নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন অ্যালার্জিক এনসেফালোমায়েলাইটিস করতে পারে। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে টিকা নেয়াকে প্রি-এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস ও আক্রান্ত হওয়ার পরে টিকা নেয়াকে পোস্ট-এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস বলে।
পশুচিকিৎসক, চিড়িয়াখানার প্রাণীদের দেখাশোনাকারী, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী লোকজন বা উক্ত এলাকায় ভ্রমণকারী ব্যক্তি ও যারা বাড়িতে কুকুর পোষে তাদেরকে প্রতিরোধমূলক টিকা দেয়া হয়। সাধারণত তিনটি ডোজ ০, ৭ ও ২১ বা ২৮ তম দিনে ও প্রতিবছর বুস্টার ডোজ দেয়া হয়। রেবিজ ভাইরাসের সুপ্তাবস্থা অনেক বেশি হওয়ায় টিকা দেওয়ার পরে প্রতিরোধক ইমিউনিটি তৈরির জন্য পর্যাপ্ত সময় থাকে তাই এই ভ্যাকসিন পোস্ট-এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস হিসেবে নিয়মিত রুটিনমাফিক ব্যবহার করা হয়।
সাধারণত আক্রান্ত হওয়ার দশ দিনের মধ্যে দিলেও কাজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ক্ষতস্থানটি সাবান ও পানি দিয়ে কমপক্ষে ১৫ মিনিট ধৌত করতে হবে। অতঃপর আয়োডিন দ্রবণ দিয়ে পুনরায় পরিষ্কার করতে হবে। টিটেনাস টিকাও দেবার কথা বিবেচনা করতে হবে। পোস্ট-এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিসের মধ্যে টিকা ও হিউম্যান রেবিজ ইমিউনোগেøাবিউলিন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত।
হিউম্যান ডিপ্লয়েড সেল ভ্যাকসিনের পাঁচটি ডোজ ০, ৩, ৭, ১৪ ও ২৮ তম দিনে দেয়া হয়। তবে ৯০ তম দিনে আরেকটি বুস্টার ডোজ দেওয়া যেতে পারে। রেবিজ ইমিউনোগেøাবিউলিন শুধু একবার প্রথমদিনে দেওয়া হয়। এটি মূলত ক্ষতস্থানে বেশি দিতে হয়, বাকি অংশটুকু মাংসপেশিতে দিতে হয়। টিকার মধ্যে নিষ্ক্রিয় রেবিজ ভাইরাস থাকে পক্ষান্তরে ইমিউনোগেøাবিউলিন হলো অ্যান্টিবডি তাই এই দুটি ইনজেকশন শরীরের দুটি ভিন্ন জায়গায় পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রেখে দিতে হয় নতুবা রেবিজ ইমিউনোগেøাবিউলিন মধ্যস্থিত অ্যান্টিবডি ভাইরাসটিকে অকেজো করে দিবে এবং টিকার কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাবে। যদি কামড় প্রদানকারী প্রাণীকে ধরে ফেলা যায় তাহলে ১০ দিন তাকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। যদি প্রাণীটির মধ্যে রেবিজ আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায় তাহলে তাকে মেরে ফেলা উচিত। যদি লক্ষণ না পাওয়া যায় তাহলে প্রাণীটি রেবিজ প্রাণী নয়। সেক্ষেত্রে রেবিজ ভ্যাকসিন এর প্রয়োজন নেই।
জলাতঙ্ক রোগে মৃত্যু অনিবার্য হলেও এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য। এই রোগ প্রতিরোধের সর্বোৎকৃষ্ট সমাধান বাহককে (বিশেষত কুকুরকে) টিকাদান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র মতে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন নির্দিষ্ট এলাকা/ দেশের মোট কুকুরের ৭০শতাংশকে টিকা দেয়া গেলে, ঐ এলাকা/ দেশের সব কুকুরের শরীরে সম্মিলিত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠে । ফলে জলাতঙ্ক ভাইরাস কুকুর থেকে কুকুরে কিংবা মানুষে সংক্রামিত হতে পারবে না মানুষসহ অন্যান্য প্রাণিকে জলাতঙ্ক রোগের প্রকোপ থেকে সুরক্ষা একমাত্র টিকাই দিতে পারে। আমাদেরকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গের পরস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে হবে। ব্যক্তিগত ও জাতীয় স্বার্থে পোষা কুকুর বিড়ালসহ এলাকার সকল কুকুরে টিকা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবসের প্রতিপাদ্যকে অর্থবহ করতে সকলের উদ্দেশ্যে আমাদের আহ্বান, ‘জলাতঙ্ক নির্মূলে টিকাদান, পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ান’।
লেখক : ব্যাংকার, কবি ও প্রাবন্ধিক।