শহর প্রতিনিধি :
ফেনী শহরের মহিপালে ৪ আগস্ট আওয়ামীলীগের নির্বিচারে গুলিবর্ষণে ৯ জন নিহতের ঘটনায় ‘গণহত্যার সহযোগি’ আখ্যা দিয়ে জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তারের অপসারণ ও বিচার দাবী জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ৪ দফা দাবী নিয়ে শহরের ট্রাংক রোডের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দোয়েল চত্ত্বর সম্মুখস্ত স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়।
শিক্ষার্থী নাঈম ফরায়জীর পরিচালনায় বিপ্লবী ছাত্র সমাজের ব্যানারে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ফেনী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহান ও আবদুল্লাহ উবায়ের অন্তু, সোনাগাজী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রেদোয়ানুল ইসলাম, ফেনী সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম রাতুল। এসময় “আশা ছিল উন্নতি আর শান্তি, করেছেন অনিয়ম আর দুর্নীতি”, “আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ”, “আওয়ামীলীগের দোসর শাহীনা আক্তারের বিচার চাই” এমন নানা শ্লোগান দেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে শহীদ মিনার চত্বর থেকে মিছিল শুরু করে পুরাতন জেল রোড প্রদক্ষিণ করে ট্রাংক রোডের দোয়েল চত্বর এসে শেষ হয়।
আবদুল্লাহ উবায়ের অন্তু বলেন, “গত ৫ আগস্ট নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। আমাদের ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন করতে পারিনি। স্বৈরাচার গেলেও তাদের দালালরা এখনো টিকে আছে। আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসনের চিন্তা করছেন তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে হত্যাকারীদের সাফাই গাইছেন তাদের সাবধান করছি। স্বাধীন দেশে দূর্নীতি, চাঁদাবাজী চলবেনা।”
রফিকুল ইসলাম রাতুল বলেন, “ফেনীর ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক গণহত্যা ৪ আগস্ট মহিপালে। সেদিন পাখির মত আমার ভাইদের গুলি করে মারা হয়। জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তারের তত্ত্বাবধানে দুইজন ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন। তারা কোন ছাত্র-জনতাকে সহায়তা করেনি। ১৭ জুলাই শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীবাহিনী ছাত্র-ছাত্রীদের নির্যাতন, ১৮ জুলাই বড় মসজিদের সামনে পুলিশের গুলিবর্ষণের সময় জেলা প্রশাসকের ভূমিকা ছিল নিরব। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ পুনরায় স্বাধীন হয়।”
রাতুল আরো বলেন, ফেনীতে যারা গুলি করেছে তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। জেলা প্রশাসকের ভূমিকার কারনে যৌথবাহিনী কাজ করতে পারেনি। এতদিন পার হলেও ডিসি শাহীনা কোনো শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করেনি। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ফেনীর দুই সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন নাসিম ও নিজাম হাজারীকে কদমবুচি করতেন। তাদের সঙ্গে যোগসাজশে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন।” অবিলম্বে জেলা প্রশাসকের অপসারণ ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবীর মধ্যে রয়েছে- ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তারের পদত্যাগ ও অপসারণ, আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগে সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে নিম্নপদস্থ কর্মকর্তা যারা অন্যায়, অত্যাচার দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষে দালালি করেছে তাদেরকে দ্রুত অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আওয়ামীলীগকে যারা পূর্নবাসনের চেষ্টা করছে তাদের অচিরেই বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে যারা হত্যাকারীদের রক্ষা করেছে তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আনতে হবে।