দৈনিক ফেনীর সময়

‘আমার নেত্রীর বিরুদ্ধে যারা কুৎসা রটাবে তাদের কাউকে ছাড় দেব না’

‘আমার নেত্রীর বিরুদ্ধে যারা কুৎসা রটাবে তাদের কাউকে ছাড় দেব না’

নোয়াখালী প্রতিনিধি :

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিএনপি নেতাদের কটুক্তির প্রতিবাদে নোয়াখালীতে বিশাল সমাবেশ করেছেন সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। শনিবার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে সদর-সুবর্নচর আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমার নেত্রীকে গালাগালি করা আর আমার কর্মীদেরকে গালাগালি করা একই কথা। বাংলাদেশের যেকোন প্রান্ত থেকে শেখ হাসিনাকে গালি দিলে আমাদের গায়ে লাগে। নেত্রীর বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

নিজেকে বাদ দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি গঠনের প্রসঙ্গ তুলে একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘তারা ভেবেছিল কমিটি থেকে বাদ দিলে আমার সাথে কেউ থাকবে না। তাদের সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। আমার জনপ্রিয়তা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।’ এসময় প্রতিবাদ সমাবেশ আহবানের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমার প্রিয় নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিএনপির লোকজন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শোকের মাসে অশ্লীল কুটুক্তি করেছে আমি আর ঘরে বসে থাকতে পারি না। আমি সিঙ্গাপুর থেকে ছুটে এসে এই প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছি। সদর সূবর্ণচর নেতাকর্মীদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক ও প্রস্তুতি সভা করে এই সভার ডাক দিয়েছি। আজ প্রতিবাদ সভা বিশাল জনসভায় পরিণত হয়েছে। প্রতিবাদ সমাবেশে লক্ষাধিক লোক উপস্থিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি আপনাদের নিকট কৃতজ্ঞ এবং চিরঋণী হয়ে গেলাম। আপনারা আমার নেত্রীর জন্য এবং আমার জন্য দোয়া করবেন।’

প্রতিবাদ সমাবেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মালেক উকিলের কণিষ্ঠপুত্র বাহাউদ্দিন খেলন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিএনপির লোকজন কুটুক্তি করেছে কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগ কোন প্রতিবাদ সভা করতে পারেননি। আপনাদের জনপ্রিয় নেতা একরাম চৌধুরী বিশাল সমাবেশ করে আজ দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি এখানে একরাম চৌধুরীর বিকল্প নেই।’

নোয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সামছুদ্দিন জেহনের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছেরের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নাইম উদ্দিন, যুবলীগের আহবায়ক ইমন ভট্ট, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মালেক উকিলের কণিষ্ঠ পুত্র বাহাউদ্দিন খেলন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান আরমান, সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক সুজন ও আবুল হাসনাত আদনান, নেয়াজপুর ইউনয়নের চেয়ারম্যান আমির হোসেন বাহাদুর, কাদির হানিফ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রহিম, আল্ডারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, একলাশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান দিপু, অশ^দিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছিম মাহমুদ সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়াম্যানরা বক্তব্য রাখেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে নোয়াখালী পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী যোগ দেন। জেলা শহর মাইজদী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে রওশনবানী সিমেনা হল এলাকা পর্যন্ত মানুষের ঢল নামে। বিকেল ৩টা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত সমাবেশস্থলে খন্ড খন্ড মিছিল আসতে থাকে। এক সময় প্রতিবাদ সমাবেশ পরিণত হয় জনসমুদ্রে।

উল্লেখ্য ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত করে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এরপর থেকে জেলা কমিটির তিন বারের সাধারণ সম্পাদক সদর-সুবর্ণচর আসনের সংসদ সদস্য একরামুল কমি চৌধুরী ও তার অনুসারীদের সাথে আহবায়ক কমিটির নেতাদের সাথে দূরত্ব দেখা দেয়। যার করণে একরামুল করিম চৌধুরীকে আহবায়ক কমিটির ১ নম্বর সদস্য করা হলেও তিনি এবং তার অনুসারী কোন সদস্য আহবায়ক কমিটির কোন সভায় অংশগ্রহণ করেনি।

এর পরিস্থিতিতে ১০ সেপ্টেম্বর জেলা সদরে এবং ১২ সেপ্টেম্বর সুবর্ণচরে বিএনপির সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তির প্রতিবাদে লক্ষাধিত লোকের উপস্থিতিতে সমাবেশ আহবান করেন সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। সমাবেশ দুটিতে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকে নিজেদের মধ্যে মান অভিমান ভুলে অংশগ্রহণ করার জন্য আহবান জানান তিনি। তবে, আজকের প্রতিবাদ সমাবেশে একরামের অনুসারী ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির গুরুত্বপর্ণ নেতাদের কাউকে দেখা যায়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!