নিজস্ব প্রতিনিধি :
“পুষ্টি নিয়ে অসচেতনতা রয়েছে। অনেক কিছু জানিনা বলেই মানা হয়না। মানুষ স্বাভাবিকভাবে সবকিছু মানতে চায় না। প্রতিটি বয়সেই খাবারের মধ্যে প্রার্থক্য রয়েছে। সৃষ্টিকর্তা একেকটা অঞ্চলে একেকরকম খাদ্য সৃষ্টি করেছেন। বাংলাদেশে যা খাই আমেরিকা-ইউরোপের মানুষ সেটা খায়না। বাংলাদেশে যে খাদ্য উৎপাদিত হয় সেগুলোতে পর্যাপ্ত পুষ্টি রয়েছে। যা কিছু সুস্বাদুকর তা কিছু ক্ষতিকর। আমরা ভাজাপোড়া, মিষ্টি খেতে পছন্দ করি। চট্টগ্রামের দিকে খুব বেশি কালাভুনা খেতে চায়। খেতে স্বাদ হলেও তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। শরীরের জন্য শর্করা, প্রোটিন ভারসাম্য রেখে খেতে হবে।”
শনিবার দুপুরে ফেনী শহরের বেস্ট ইন চাইনীজ রেষ্টুরেন্টে তানিরা’স ডায়েট ফুডের আয়োজনে সেমিনারে এসব কথা বলেন নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: এএসএম ওয়ালী উল্লাহ।
“জানবো, মানবো ও সুস্থ থাকবো” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মনিরা আক্তার। প্রধান আলোচক ছিলেন ডায়েট ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদ মো: এরশাদ খান সালমান। অতিথি ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) এনামুল হক, আল-জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদরাসার মুফতি আবদুল হান্নান, প্রথম আলো প্রতিনিধি আবু তাহের, দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, প্লাটিনাম সিকিউরিটিজ চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জ এর পরিচালক আইভি আনোয়ার, চরলক্ষীগঞ্জ ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইলিয়াস।
আশরাফুল হক আরমানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন স্টার লাইন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান জাফর উদ্দিন, অষ্ট্রিয়া প্রবাসী ডা: শামছুল আরেফিন, তানিরা’স ডায়েট ফুডের পরিচালক ডা: মো: শাহরিয়ার, ফেনী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি একেএম আবদুর রহীম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন তানিরা’স ডায়েট ফুডের স্বত্বাধিকারী জাহিন আক্তার।
পুষ্টিবিদ মো: এরশাদ খান সালমান বলেন, “একসময় পেট থাকা মানে সম্পদ মনে করা হতো। তার কাছে অনেক টাকা আছে। এখনকার সময় যার পেট আছে তার ডায়াবেটিক, হাইপারটেনশন, পেটে লিভারের সম্ভাবনা আছে বলে মনে করা হয়। যেই বাচ্চা জন্মের পর আয়রন পায়না সেই বাচ্চা অপুষ্টিতে ভোগে। অপুষ্টি-অতিপুষ্টি কোনটিই ভালো নয়। অতিপুষ্টি সবসময় ভয়ংকর। অপুষ্টির কারনে রক্তস্বল্পতা, রাতকানা, গলগন্ড সহ নানা রোগের সম্ভাবনা হয়। অতিপুষ্টির কারনে বন্ধ্যাত্ব, ডায়বেটিক, অতিরিক্ত ওজন সহ নানা সমস্যা হয়। খাদ্যাভাসের কারনে এসব রোগের সৃষ্টি হয়।”
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশের শতকরা ৪১ ভাগ নারী আয়রনের ঘাটতিতে ভুগছেন। আমরা প্রতিদিন সকালে নাস্তার সময় রুটি দিয়ে আলু ভাজি খাচ্ছি। এছাড়া প্রতিদিন আমরা দুপুরে ভাত খেয়ে থাকি। ভাত, রুটির মধ্যে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর।” সুস্থভাবে বাঁচার জন্য এইসব খাবার পরিহার করে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস তৈরিতে উপস্থিত সকলকে মনোনিবেশ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।