নিজস্ব প্রতিনিধি :
ইতিপূর্বে কোন পদপদবী ছিল না। শুধু তাই নয়, এলাকার রাজনীতিতে সম্পৃক্ততাও নেই। ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের গোসাইপুর এলাকার বাসিন্দা হলেও ছোটবেলা থেকে কুমিল্লা ও ফেনী শহরে বসবাস। অথচ সম্মেলনের আগেরদিন প্রার্থী হয়ে সভাপতি পদ ভাগিয়ে নিয়ে চমকে দেন রাকিবুল হাছান পিয়াশ। এরপর শিবির সম্পৃক্ততার অভিযোগে ঘোষণার ১৮ ঘন্টার মাথায় ওই কমিটি স্থগিত করা হয়। শুধু স্থগিত নয়, এবার ছাত্রলীগে পদ হারাতে যাচ্ছেন স্থগিত কমিটির সভাপতি পিয়াশ।
দীর্ঘদিন পর সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি দেয়া হলেও ছাত্রলীগের এমন পরিস্থিতির জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবদুল আলিমকে দোষারোপ করছেন ছাত্রলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
সংগঠন সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন পর ২৬ মে বৃহস্পতিবার উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে ১৪ জন প্রার্থী হন। এর মধ্যে রাকিবুল হাছান পিয়াশকে সভাপতি ও ফারুক হোসেন বাপ্পীকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর জামায়াত-শিবির সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠলে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কমিটি স্থগিত করা হয়। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে মো: হাসান, মো: শাহীন ও তুহিন সরোয়ারকে দিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি পরবর্তী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ সহ তদন্ত প্রতিবেদন ফেনী জেলা ছাত্রলীগের কাছে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
এলাকার বিভিন্ন স্তরের আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্মেলনের দিন সভাপতি হিসেবে পিয়াশের নাম ঘোষণার পর হতভম্ভ আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা। শুধু তাই নয় ছাত্রলীগের কোন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন না করে উপজেলার শীর্ষ পদে নাম শুনে চমকে যান তারা। হঠাৎ রাজনীতিতে আর্বিভাব হওয়া পিয়াশকে আগে থেকে চিনতেন না নেতাকর্মীদের অনেকেই। পারিবারিকভাবে আওয়ামী পরিবার হলেও কখনো কর্মসূচীতে তার অংশগ্রহণ ছিল না। বাবার চাকুরীর সুবাদে ২০১৫ সালে কুমিল্লা পুলিশ লাইন স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে। এরপর থেকে ফেনী শহরের গাজী ক্রস রোডে বসবাস করে আসছে তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক নেতা জানান, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবদুল আলিম মজুমদার নিজের প্রভাব বাড়াতে এমন একজনকে সভাপতি করা হয়েছে ছাত্রলীগে যার কোন নূন্যতম সম্পর্ক নেই। অথচ সেটি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের সাথে সাংঘর্ষিক।
জেলা ছাত্রলীগের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য ও আগের কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো: হাসান ফেনীর সময়কে জানায়, তারা তদন্ত প্রতিবেদন জেলা ছাত্রলীগের কাছে জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
হাসান আরো জানায়, কখনো রাজনীতি করার মানসিকতা না থাকায় ফেসবুকে সরকার বিরোধী স্ট্যাটাস পোষ্ট-শেয়ার করেছে বলে তদন্তে প্রমানিত হয়েছে। তাই পিয়াশকে সভাপতি পদে পূর্ণবহাল না করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহম্মদ তপু জানায়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হচ্ছে। জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপির নিদের্শনা অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।