দৈনিক ফেনীর সময়

নির্বাচনী এলাকা জানেননা ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী নুরুল ইসলাম যুক্তিবাদী

নির্বাচনী এলাকা জানেননা ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী নুরুল ইসলাম যুক্তিবাদী

ফেনী-২

আরিফ আজম :

আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে ফেনী-২ আসনে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মনোনয়নে মোমবাতি প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন দলের জেলা সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য মাওলানা নুরুল ইসলাম যুক্তিবাদী। অথচ নিজ নির্বাচনী এলাকার সীমানাই তিনি জানেননা। ইতিমধ্যে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঝুলানো পোষ্টার-ব্যানারে এমন অবস্থা দেখে হাস্যরস করছেন সাধারণ মানুষ।

সরেজমিন দেখা গেছে, নির্বাচনে প্রার্থীতা জানান দিয়ে মোমবাতি প্রতীকের প্রচারণায় গত কয়েকদিন ধরে শহরের বিভিন্ন স্থানে পোষ্টার-ব্যানার লাগানো হয়। তিনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত সমর্থিত বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী জানিয়ে মোমবাতি মার্কায় ভোট চান। এসব প্রচারণায় ফেনী ২ আসনকে “ফেনী সদর-সোনাগাজীর আংশিক” উল্লেখ করা হয় পোষ্টারে।

মাওলানা নুরুল ইসলাম যুক্তিবাদীর গ্রামের বাড়ি ছাগলনাইয়া উপজেলার পশ্চিম পাঠানগড় এলাকায়। তিনি নিজ এলাকায় পশ্চিম পাঠানগড় ফজলুর রহমান ইসলামিয়া মাদরাসা পরিচালনা করছেন। কাছারি বাছারে যুক্তিবাদী দাওয়াখানা এন্ড মাহদী মেডিকেল হল নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া তিনি মটুয়া মজুমদার জামে মসজিদ খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

জানা গেছে, ২০০৮ সাল পূর্ববর্তী সময়ে ফেনী সদর উপজেলার ছনুয়া, ফাজিলপুর, ফরহাদনগর, ধলিয়া ও লেমুয়া ইউনিয়ন এবং সোনাগাজী উপজেলা নিয়ে ফেনী-৩ আসন আর সদর উপজেলার অপর ৭টি ইউনিয়ন ও দাগনভূঞা উপজেলা নিয়ে ফেনী-২ আসন ছিল। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগমুহুর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সীমানা পূর্ননির্ধারণ করে। এতে করে ফেনী সদর উপজেলা ও পৌরসভা নিয়ে ফেনী-২ ও দাগনভূঞা-সোনাগাজী উপজেলা নিয়ে ফেনী-৩ আসনের নির্বাচনী এলাকা।

পর্যবেক্ষক মহলের মতে, মাওলানা নুরুল ইসলাম যুক্তিবাদীর প্রচারণায় ফেনী সদর-সোনাগাজীর আংশিক লেখা দেখে অনেকে হাস্যরস করছেন। নিজ নির্বাচনী এলাকার সীমানা না জেনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ায় তার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনা চলছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা নুরুল ইসলাম যুক্তিবাদী ফেনীর সময় কে বলেন, প্রথমবারের মত জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। নির্বাচন কার্যালয় থেকে কেন্দ্র তালিকা না পাওয়ায় তিনি সীমানা জানতেন না। আগে ফেনী সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ও সোনাগাজীর আংশিক এলাকা নিয়ে ফেনী-২ আসন থাকায় সেভাবেই লিখা হয়েছে। তবে সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়ন নিয়ে ফেনী-২ আসন গঠিত বলে ইতিমধ্যে তিনি জেনেছেন।

আইনজীবী ও রাজনীতিক নুর হোসেন মনে করেন, “একজন ভোটার প্রার্থী হওয়ার আইনগত অধিকার রাখেন। সেজন্য তিনি প্রার্থী হওয়ার সুযোগ আছে। তাই বলে যেকেউ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া উচিত নয়। এগুলো অপরাজনীতি। যার নির্বাচনী এলাকার সীমানা জানা নেই, এসব লোকের নির্বাচনে যোগ্য হওয়া উচিত নয়। এটা দূর্ভাগ্যজনক।”

সিনিয়র সাংবাদিক রবিউল হক রবি বলেন, “এটা আচরণ বিধি লঙ্গণের মধ্যেও পড়ে। যিনি নির্বাচনী এলাকার সীমানা না জেনে অন্য এলাকাকেও তার এলাকায় যুক্ত করছেন।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!