দৈনিক ফেনীর সময়

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি কম

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি কম

নিজস্ব প্রতিনিধি :

অনেকটা উচ্ছ্বাসহীন পরিবেশে বুধবার সকাল আটটায় শুরু হয়েছে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। সকাল থেকে যেন গুমোট মেঘলা আবহাওয়ার মতোই নির্বাচনের পরিবেশ ছিল থম ধরা। উপজেলার বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরেও ভোটারদের কোনো লাইন চোখে পড়েনি।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে হারুন মজুমদার কাপপিরিচ ও জাফর উল্যাহ চিংড়ী প্রতীকে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী ভোটের মাঠে রয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন মঞ্জুরা আজিজ।
কেন নির্বাচনে উচ্ছ্বাস নেই, ভোটারও কেন কম—সকাল সাড়ে আটটায় বন্ধুয়া দৌলতপুর স্কুল ভোটকেন্দ্রে গিয়ে এই প্রশ্নের উত্তর মিলল এক ভোটারের কাছ থেকে। কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়ানো আবুল কাসেম নামের ওই ভোটার বললেন, মূলত ভোটের ফলাফল তো আগেই ঠিক হয়ে আছে। তাই ভোটারদের মধ্যে কোনো উচ্ছ্বাস নেই।

আবুল কাসেম আরও বলেন, এখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আনন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার মূল প্রার্থী। অপর প্রার্থীর জাফর উল্যা ভূঞার কোনো প্রচার-প্রচারণা ছিল না। তাই নির্বাচনের ফলাফলও একরকম নির্ধারিত।

বন্ধুয়া দৌলতপুর স্কুল ভোটকেন্দ্রের ১০টি বুথে ভোট দেবেন ৪ হাজার ২৭১ জন। অথচ ভোট শুরুর প্রথম আধা ঘণ্টায় ভোট দিয়েছেন ২৫ জনের মতো। এই কেন্দ্রে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুন মজুমদার ও জাফর উল্যাহ ভূঞাকে পাওয়া গেল। ভোটার উপস্থিতি কম কেন, প্রশ্নের উত্তরে দুজনই জানালেন বেলা বাড়লে ভোটার উপস্থিত হবেন। কেন্দ্রের বুথে সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তারা অনেকটাই অলসভাবে বসেছিলেন।

সকাল নয়টায় উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের আজমিরি বেগম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েও একই চিত্র দেখা যায়। এই কেন্দ্রের ১০টি বুথে ভোটার ৩ হাজার ৮৪৬ জন। অথচ সকাল নয়টা পর্যন্ত ভোট দিতে এসেছেন ৩০ জনের মতো।

সকাল সাড়ে ৯টায় ফুলগাজী পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের নয়টি বুথের তিনটি বুথে একটিও ভোট পড়েনি। এই কেন্দ্রে ৩ হাজার ৮৪৬ জন ভোটার রয়েছেন। তবে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ৫০ জনের মতো। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নয়ন দেবনাথ এজন্য আবহাওয়াকে দায়ী করলেন। তিনি বলেন, সকালে ওই এলাকায় আবহাওয়া কিছুটা খারাপ ছিল। তাই ভোটার উপস্থিতি কম।

বেলা ১২টায় উপজেলার জগতপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় সেখানে ৬টি বুথে সকাল ৮টা থেকেই ভোটগ্রহণ চলছে। কিন্তু ভোটারের লাইনগুলো পুরোই ফাঁকা। হিসাব মতে, ৪ ঘণ্টায় এ কেন্দ্রের ৬টি বুথে ১৭৩ জন ভোট দিয়েছেন। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বাবুল চন্দ্র সাহা জানান, জগতপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজার ১২৪ জন ভোটার রয়েছে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয়টি বুথে ১৭৩ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। সকাল থেকেই ভোটারের উপস্থিতি কম দেখা যাচ্ছে। তবে দুপুরের পর ভোটার উপস্থিতি বাড়তে পারে।

সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ইসমাত জাহান লিপি জানান, ফুলগাজী উপজেলার ৩২টি ভোট কেন্দ্রের ২৪৪ বুথে মোট ১ লাখ ৫হাজার ৬৭১ জন ভোটার রয়েছে। তন্মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৪ হাজার ৭৬০ ও মহিলা ভোটার ৫০ হাজার ৯১১ জন। ভোটকেন্দ্রগুলোতে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে ৩২ জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে ২৫২ জন, পোলিং এজেন্ট ৫০৪ জন দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া ভোটে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ১ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও ৩০১ জন পুলিশ সদস্য, ৫৩১ জন আনসার ভিডিপি, ২ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাব টিমসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স, মোবাইল টিম নিয়োজিত রয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!