দৈনিক ফেনীর সময়

আইসিসি মাসসেরার মনোনয়নে মুশফিক

আইসিসি মাসসেরার মনোনয়নে মুশফিক
অনলাইন ডেস্ক:

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাটিতে দুই টেস্টে দারুণ ফর্মে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছোটানোর পর এবার আইসিসির মাসসেরার মনোনয়ন পেলেন এই ডানহাতি ব্যাটার।

 

আজ সোমবার আইসিসি মে মাসের সেরা পুরুষ খেলোয়াড়দের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে জায়গা করে নিয়েছেন মুশফিক। তিনি ছাড়া তালিকায় আরও আছেন শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও তার সতীর্থ পেসার আসিথা ফার্নান্দো।

গত মাসে ঘরের মাঠে লঙ্কানদের কাছে টেস্ট সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাট হাতে স্মরণীয় এক সিরিজ কাটিয়েছেন মুশফিক। ২ ম্যাচের সিরিজে ৩০৩ রান করেছেন তিনি। সিরিজে দুটি সেঞ্চুরিও হাঁকিয়েছেন তিনি। সিরিজে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিকও তিনি। চট্টগ্রাম টেস্টে শতক হাঁকানোর পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৫ হাজার রানের মালিকও হয়েছেন তিনি।

চট্টগ্রাম টেস্টে মুশফির ১০৫ রানের ইনিংসে ভর করে ৬৮ রানের লিড পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি এসেছিল খুব কঠিন সময়ে। ঢাকা টেস্টে ১৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। মুশফিক ক্রিজে নামার কিছুক্ষণের মধ্যে আরও ২ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। ২৪ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলেন মুশফিক ও লিটন দাস। দুজনেই দেখা পান সেঞ্চুরির, তাদের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে আসে ২৭২ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৬৫ রান। মুশফিক অপরাজিত থাকেন ১৭৫ রানে। দল অবশ্য ম্যাচটি হেরে যায়। তবে আইসিসি টেস্ট র‍্যাংকিংয়ে ৮ ধাপ এগিয়ে ১৭তম স্থানে উঠে আসেন মুশফিক।

অন্যদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজেই ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে ছিলেন ম্যাথিউস। তার অভিজ্ঞতার ওপর ভর করেই সিরিজ জিতে নেয় লঙ্কানরা। তিনি নিজে সিরিজের সর্বোচ্চ রান (৩৪৪) সংগ্রাহক হন। প্রথম টেস্টে দলের প্রথম ইনিংসে ১৯৯ রানে আউট হন তিনি। অল্পের জন্য ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি মিস করলেও তার ওই ইনিংসে ভর করেই ৩৯৭ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলঙ্কা। তবে বাংলাদেশ লিড নেওয়ার পর ম্যাচটি ড্র হয়।

সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ফের একবার সেঞ্চুরি হাঁকান ম্যাথিউস। প্রথম ইনিংসে তিনি ১৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন। জবাবে বাংলাদেশ ৩৬৫ রান করলে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। এক পর্যায়ে ১৬৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলটি শেষ পর্যন্ত বড় লক্ষ্য ছুড়ে দেয় ম্যাথিউসের ইনিংসে ভর করেই। প্রথমে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে ১০২ রান এবং পরে দীনেশ চান্ডিমালের সঙ্গে ১৯৯ রানের জুটি গড়েন ম্যাথিউস। বড় লিডও পায় শ্রীলঙ্কা, যা বাংলাদেশ পেরোতে পারেনি। দারুণ দুটি ইনিংস খেলে ম্যাথিউস টেস্ট র‍্যাংকিংয়ে ৬ ধাপ লাফিয়ে ১৫তম স্থানে উঠে আসেন।

একই সিরিজে বল হাতে জাদু দেখান আসিথা। সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক হন তিনি। প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেট পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে একাই ১০ উইকেট নেন এই পেসার। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ের কারণে বাংলাদেশের টপ অর্ডারে ধস নামে। বিশেষ করে বাংলাদেশের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হককে তুলে নিয়ে ধসের শুরু করেন তিনি। এরপর আরও দুই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসের লেজটাও গুঁড়িয়ে দেন এইও পেসার।

আর দ্বিতীয় ইনিংসে আসিথাকে খেলতেই পারছিলেন না টাইগার ব্যাটাররা। দুই ওপেনারকে বিদায় করার পর লিটন-সাকিব প্রতিরোধ গড়েছিলেন। কিন্তু তারা দুজনে ফিফটির দেখা পাওয়ার পরই বিদায় নেন আসিথার বলেই। এরপর তাইজুলকে বিদায় করে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ইনিংসে ৫ উইকেটের দেখা পান তিনি। ইনিংস শেষে তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ক্যারিয়ার সেরা ৬/৫১। শেষ উইকেটটি নিয়ে তিনিই লঙ্কানদের জয় নিশ্চিত করেন। পরে ম্যাচসেরাও নির্বাচিত হন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!