দৈনিক ফেনীর সময়

পরশুরামে মুহুরী নদীর পাড়ে মাটি বিক্রি

নিজস্ব প্রতিনিধি :

পরশুরাম পৌর শহরের খোন্দকিয়া এলাকায় মুহুরী নদীর পাড়ের মাটি কেটে নিয়েছেন আবদুল মুনাফ নামে এক ব্যক্তি। জমির মালিক বকুল মিয়া থেকে কিনে তিনি বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের কাছে বিক্রি করেন। ঘটনাটি জেনে এক সপ্তাহের মধ্যে ভরাটের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহাম্মদ চৌধুরী নাসিম।

শুক্রবার বিকালে সরেজমিন দেখা গেছে, মুহুরী নদীর পাড়ে সেগুন গাছের বাগান ছিল। তৎসংলগ্ন একটি অংশ থেকে স্কেভেটর দিয়ে ৫-৬ ফুট গভীর মাটি কেটে বিক্রি করা হয়। মাটিভর্তি করে ট্রাক্টরগুলো দিনরাত চলাচল করায় কাঁচা রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন যাতায়াতে সেখানকার বাসিন্দারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বিষয়টি জেনে সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম বৃহস্পতিবার রাতে তার ফেসবুকে মাটি কেটে নেয়া জমির ছবি সহ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, “এই বেড়িবাঁধ যারা কেটেছেন তাদের তথ্য আমার কাছে আছে। তাদের প্রতি অনুরোধ আগামী বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে বেড়ীবাঁধ মেরামত করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে। নাহলে আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা করা সহ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

বকুল মিয়া ফেনীর সময় কে জানান, নদীর পাড়ের পাশে পৈত্রিক সূত্রে মালিকীয় তার ৮০ শতক জমি রয়েছে। ওই জমিতে দীর্ঘদিন তিনি সেগুন গাছের বাগান করেছেন। সম্প্রতি গাছগুলো কেটে জমির একটি অংশ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে মাটি বিক্রি করে দিয়েছেন।

স্থানীয় কাউন্সিলর আবদুল মান্নান লিটন ফেনীর সময় কে বলেন, যেখান থেকে মাটি কাটা হয়েছে সেটি বেঁড়িবাঁধ নয়। মাটি কেটে নেয়া জমি থেকে বেঁড়িবাঁধ দূরে রয়েছে। তবুও নদীর পাড় থেকে মাটি কাটা ঠিক হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম ফেনীর সময় কে জানান, এ ব্যাপারে তার কিছুই জানা নেই। কিছুদিন আগে যোগদান করেছেন। যেখান থেকে মাটি কেটে নেয়া হয়েছে সেটি বেঁড়িবাঁধ কিনা সেটা রবিবার সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করবেন।

পরশুরাম মডেল থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন খান ফেনীর সময় কে জানান, বিষয়টি সংসদ সদস্যের ফেসবুকে দেখে সত্যতা যাচাইয়ে গতকাল সকালে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। জমির মালিকের সাথে কথা হয়েছে। তিনি গাছের বাগান কেটে ফসলি জমি করতে মাটি বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছেন।

উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মং চিংনু চাকমা ফেনীর সময় কে বলেন, বিষয়টি তিনি সংসদ সদস্যের ফেসবুকে দেখেছেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নেয়া হবে।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে (২০১০) বলা হয়েছে, বিক্রির উদ্দেশ্যে বালু বা মাটি উত্তোলনের ফলে কোনো নদীর তীর ভাঙনের শিকার হলে সে ক্ষেত্রে বালু বা মাটি তোলা যাবে না। অন্যদিকে, সেতু, কালভার্ট, বাঁধ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!