দৈনিক ফেনীর সময়

ফেনীতে শিশুদের টিকা নেই দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা

আরিফ আজম :

গত কয়েকদিন ধরে ফেনী শহরের ট্রাংক রোডের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পৌরসভার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সন্তানকে নিয়ে ঘুরছিলেন চিকিৎসক দম্পতি। জন্মের পর থেকে প্রায় দুই মাস বয়সী একমাত্র ছেলে সন্তানকে কোন টিকা দিতে না পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েন তারা।

একপর্যায়ে গতকাল রবিবার জেলার অন্য একটি উপজেলা থেকে তাকে টিকা দেয়া হয়। সময়মতো টিকা দিতে না পারলে শিশুরা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয় বলে জানান ওই অভিভাবক।

ফেনী শহর সহ জেলার বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে টিকা সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। স্বাস্থ্য সেবার এসব প্রতিষ্ঠানে কয়েকদিন ধরে টিকা না পেয়ে ফেরত যান অভিভাবকরা।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, সংক্রামক রোগে শিশু মৃত্যুহার কমানোর জন্য এসব টিকা দেয়া হয়। শিশুদের জন্য জেলায় ৩৬ হাজার টিকার চাহিদা প্রেরণ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে ৩১ অক্টোবর ২০ হাজার টিকা পাওয়া যায়। প্রতিমাসে পেন্টা ১২ হাজার ও পিসিবি ৩ হাজার সহ ১৫ হাজার টিকা প্রয়োজন। দেড় মাস থেকে ৯ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের শরীরে পেন্টা ও পিসিবি টিকা দেয়া হয়।

শহরের নাজির রোড এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বলা হচ্ছে টিকা নেই। টিকাদানের কার্ডে নির্ধারিত কেন্দ্র মেরি স্টোপসেও টিকা পাওয়া যাচ্ছেনা।

ইপিআই সুপার আবদুর নুর জানান, চাহিদামতো টিকা পাওয়া যাচ্ছেনা। মাসখানেক ধরে পেন্টা ও পিসিবি সহ বিভিন্ন ধরনের টিকা সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: এসএসআর মাসুদ রানা ফেনীর সময় কে বলেন, টিকা সংকট একটি জাতীয় সমস্যা। গত কয়েকমাস ধরে এই সমস্যা সারাদেশে রয়েছে। শিশুদের শরীরে প্রয়োগ করা এসব টিকা বিদেশ থেকে আনা হয়। মাঝেমধ্যে টিকার সংকট হয়, আবার তা স্বাভাবিক হয়ে যায়।

এদিকে পৌরসভার একটি সূত্র জানায়, ফেনী পৌর এলাকার জন্য ২ হাজার টিকার চাহিদা রয়েছে। সবশেষ ১ হাজার ৬শ টিকা পাওয়া গেছে। চলতি মাসের গত ১০ দিন ধরে টিকা নেই বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীরা।

নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ডা: এসএম ওয়ালী উল্যাহ ফেনীর সময় কে বলেন, পেন্টা ও পিসিবি টিকা শিশুদের মৃত্যুহার কমায়। এসব টিকা নিউমোনিয়া ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রামকের প্রতিষেধক। নির্দিষ্ট সময়ে শিশুকে টিকা দেয়া না গেলে এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!