দৈনিক ফেনীর সময়

মানবতাবাদী যোদ্ধা জাফরুল্লাহ চৌধুরী

মানবতাবাদী যোদ্ধা  জাফরুল্লাহ চৌধুরী

-নাজমুল হক

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছিলাম কিন্তু আমরা কি জানি দেশটা কিভাবে স্বাধীন হয়েছে। কাহারা জীবনবাজী রেখে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংগালী জাতির ভাবমূর্তি তুলে ধরেছেন। ভারতের ফিল্ড হাসপাতাল যুদ্ধবিধ্বস্ত আহত ও নাগরিকদের চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে। কিভাবে বাংলাদেশের নাগরিকদের স্বল্প মুল্যে উন্নত চিকিৎসার কেন্দ্রবিন্দু গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। আজীবন মানবতার সেবায় নিয়োজিত ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ। বাংলাদেশে হাজার হাজার ডাক্তার আছে কিন্তু কতোজন মানবতার সেবায় নিয়োজিত আছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নির্মম গণহত্যার প্রতিবাদে লন্ডনের হাইড পার্কে পাকিস্তানি পাসপোর্ট ছিঁড়ে আগুন ধরিয়ে রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকে পরিণত হয়েছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বিশ্ববাসী চিনতে পেরেছে বাংলাদেশ এবং যুবক ডা. জাফরুল্লাহকে।

ঢাকা মেডিকেল থেকে এমবিবিএস পাস করে ইংল্যান্ডে এফআরসিএস পড়তে গিয়েছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কিন্তু এফআরসিএস ফাইনাল পরীক্ষা না দিয়েই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এফআরসিএস পরীক্ষার মাত্র এক সপ্তাহ আগেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। এরকম দেশপ্রেমিক নাগরিকদের আত্বত্যাগের বিনিময়ে আমারা পেয়েছি বাংলাদেশ। লন্ডনের নিরাপদ আশ্রয় ত্যাগ করে রাস্ট্রবিহিন নাগরিক হয়ে ভারত হয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ একটি বিরল ঘটনা। এই ইতিহাস নতুন প্রজন্মের জন্য পাঠ্যপুস্তকে নেই। আমরা প্রতি জেলায় কমপক্ষে ১০০ জন করে দেশপ্রেমিক মানবতাবাদী ডাক্তার দেখতে চাই। সরকারের উচিৎ মানবতাবাদী ডাক্তারদের উৎসাহ প্রদানের জন্য জাতীয়ভাবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী পুরস্কার প্রবর্তন করা এবং প্রতিবছর ১০ জন ডাক্তারকে পুরস্কার প্রদান করা।

মুক্তিযুদ্ধের ২নং সেক্টরের কমান্ডার মেজর খালেদ মোশারফের সহযোগীতা নিয়ে ভারতের আগরতলায় ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট “বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল” প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন। তিনি অনেক নারী মুক্তিযোদ্ধাকে স্বাস্থ্য সেবিকার প্রশিক্ষণ প্রদান করেন, তাহারা রোগীদের সেবা করতেন, ডা. জাফরুল্লাহর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবাপদ্ধতি বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল “ল্যানসেট”-এ প্রকাশিত হয়। হাসপাতালটির কমান্ডিং অফিসার ছিলেন ডা. সিতারা বেগম বীরপ্রতীক। মুক্তিযুদ্ধের সময় আহত হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণ বাঁচিয়েছে ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট এ ফিল্ড হাসপাতাল। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ফিল্ড হাসপাতালটি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামে দাঁড়িয়ে আছে ঢাকার অদূরে সাভারে। ফিল্ড হাসপাতালটির নাম ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নামটি দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের জন্য প্রায় ৩১ একর জমি সাভারে বরাদ্দ দিয়ে ছিলেন।

গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিসিন কোম্পানি প্রতিষ্ঠার পরে জাতীয়ভাবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে ১৯৮২ সালের জাতীয় ঔষুধ নীতি প্রণয়নে ভূমিকা রাখা। স্বাধীনতার পর স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপকভাবে উন্নয়ন ঘটেছে, তার একক প্রচেষ্টায় আমদানির তালিকায় বিদেশি ওষুধের সংখ্যা কমে ২২৫ এ দাঁডিয়েছে। বর্তমানে ৯০ শতাংশ ওষুধ তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ এখন অন্যতম ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ। জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং জেনারেল এরশাদ সরকারের সময়ে তাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কিন্তু তিনি লোভনীয় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী শুধুমাত্র দরিদ্র মানুষের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য।

১৯৮০ সালে জিয়ার গড়া প্রথম জাতীয় মহিলা উন্নয়ন কমিটির দুই পুরুষ সদস্যের একজন হিসেবে প্রাথমিকে ৫০ শতাংশ মহিলা শিক্ষক ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ ছাত্রী নেয়ার সুযোগ করেছিলেন, যা কার্যকর হয়েছিল এরশাদ আমলে। জিয়াউর রহমানের আমলে পুলিশে মহিলা নিয়োগ দেয়া শুরু হলে দেশের প্রথম দুই নারী পুলিশ হিসেবে নিয়োগ পান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মী হোসনে আরা ও চামেলী বেগম। সাধারণ মানুষকে কমদামে ওষুধ সরবরাহ করতে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে মাত্র ১২০০ টাকায় ডায়ালাইসিস করতে পারে দরিদ্র মানুষ। বাংলাদেশের যে সকল মানবতাবাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ার নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পাকিস্তান আমলে ২২ পরিবার ছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছরে ২২ পরিবার থেকে ২২ হাজার পরিবার হয়েছে! আবার ২২ হাজার পরিবার থেকে প্রায় ২২’লক্ষ পরিবার। বেগমপাড়া হয়েছে। সেজন্য বাংলাদেশে ২০ হাজার টাকা কেজি সোনার জিলাপি বিক্রি হয়!! ডাক্তার জাফরুল্লাহ ওদের দলে যোগদান করেন নাই। ক্ষমতা দখল, বিলাশী জীবন, ভিআইপি সিআইপি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ গ্রহণ করেন নাই, সাংসদ সদস্য ও মন্ত্রীত্ব গ্রহণ করেন নাই। তার চাওয়া পাওয়া ছিল দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, মানবতার সেবায় নিয়োজিত থাকা।

স্বাধীন দেশে আজকে যাদের হাতে ক্ষমতা ও ব্যবসা বানিজ্যের চাবিকাঠি ওরা সিন্ডিকেট তৈরি করে চাল ডাল আটা তেল চিনি গুড়ো দুধ ডিম মাছ মুরগী গোশতও লাগামহীন মুল্য বৃদ্ধি করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির পরিবারে অপুষ্টি লাগিয়ে রেখেছে। জাতীর সংকটে এগিয়ে ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, তাকে অন্ধ দলবাজি রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি বন্দী করতে পারে নাই। তিনি ছিলেন খাটি দেশপ্রেমিক নাগরিক ও মানবতাবাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ ব্যাচের মেধাবী ছাত্র ওয়াকিল রহমান ডা. জাফরুল্লার স্মৃতিচারণ করেছেন (ফেসবুকে প্রাপ্ত) আমি আর জাফর ভাই (ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী) একদিন বগুড়া যাচ্ছি ডাক্তারদের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য। আমাদের বহনকারী জিপটি ফেরিতে উঠল। আমি, জাফর ভাই, উনার নারী ড্রাইভার তিনজন এক কোনায় দাঁড়িয়ে মুড়ি মাখানো খাচ্ছিলাম। হঠাৎ জাফর ভাইয়ের চোখ গেল এক ভিক্ষুক কিংবা ঐ টাইপের এক লোকের পায়ের দিকে। হাটুর নীচে পায়ের মধ্যে দগদগে ঘা। উনার গাড়িতে সবসময় চিকিৎসার জন্য ইমারজেন্সি জিনিসপত্র, ওষুধ পথ্য থাকত। আমাকে বললেন ওটা নিয়ে আসতে। তারপর জাফর ভাই নিজ হাতে সেই দগদগে ঘা পরিস্কার করে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিলেন। উনার ডাক্তার পরিচয় পেয়ে ফেরির অনেক যাত্রীই উনার পরামর্শ নিতে আসতে লাগলেন। প্রায় তিন ঘন্টার ফেরিযাত্রাতে উনি প্রায় ৪০/৫০ জন রোগী দেখলেন। পারিশ্রমিক হিসাবে এক রোগী কিছুটা জোর করেই আমাদের তিনজনকে ডাব খাওয়ালেন। ব্যাস এটাই। জাফর ভাইয়ের সাথে ওটাই ছিল আমার প্রথম লং জার্নি, ঢাকার বাইরে।

১৯৯৪ এর জুন, এমবিএ পরীক্ষা শেষ। হঠাৎ পেপারে একটা বিজ্ঞাপন দেখলাম গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস একজন এমবিএ নিবে। ইন্টারভিউ দিলাম। জাফর ভাই স্বয়ং ছিলেন বোর্ডে। চাকরিটা হয়ে গেল, জয়েন করলাম গনস্বাস্থ্যে। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ এই চারবছর খুব কাছ থেকে দেখেছি জাফর ভাইকে। আমরা যারা ওখানে চাকরি করতাম, সবাই উনাকে জাফর ভাই কিংবা বড় ভাই বলতাম। স্যার ডাক পছন্দ করতেন না। যখন ঢাকার বাইওে যেতেন কেন জানি সঙ্গী হিসাবে আমাকে পছন্দ করতেন। আমার সুপারভিশন এরিয়া ছিল উত্তরবঙ্গ। জাফর ভাইয়ের সাথে পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী সহ উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলা চষে বেরিয়েছি। বেশিরভাগ সময় ঘুমাতাম জেলা অফিসগুলোর ম্যানেজারের রুমে, ফ্লোরে, অথবা যদি গেস্টরুম থাকত সেখানে। যদি একটা খাট থাকত উনি ফ্লোরে আর আমি খাটে ঘুমাতাম, জোর করলেও শুনতেন না। খাওয়ার ব্যাপারে ছিল প্রচন্ড উদাসীন। আমার ওগুলো পছন্দ হতো না, কিন্তু ভয়ে বলতাম না। একনাগারে তিন চারদিন না ঘুমিয়ে কাজ করতে পারতেন। তাল মিলাতে পারতাম না, অসুস্থ হয়ে যেতাম। উনি দিব্যি কাজ করতেন, সাংঘাতিক পরিশ্রমী। এমনিতে রাশভারি স্বভাবের হলেও বাইরে কোথাও গেলে প্রচুর কথা বলতেন।

সামান্য তোতলা ছিলেন, উনি কথা বলার সময় মাথার চুলগুলো ঝাকিয়ে ঝাকিয়ে তোতলাতে তোতলাতে কথা বলতেন। একদিন বগুড়া অফিসে আমি আর সেখানকার ইনচার্জ জব্বার ভাই বসে আছি। হঠাৎ আমি জাফর ভাইকে নকল করে অভিনয় করতে লাগলাম। তোতলারা যেভাবে কথা বলে সেভাবে। কখন যে জাফর ভাই পিছনে এসে দাড়িয়েছে, টের পাইনি। জব্বার ভাই ইশারা দিলেও বুঝতে পারিনি। তোতলাচ্ছি আর জাফর ভাইয়ের মত বাবরি চুল ঝাকিয়ে ঝাকিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছি। হঠাৎ পিছনে হাতের স্পর্শ পেয়ে মনে করলাম আরেক স্টাফ হয়তো। আমি পিছন না ফিরেই বললাম হাহাহাত সসসসরা। পিছনে তাকিয়ে দেখি জাফর ভাই। ভয় পেয়ে গেলাম, চাকরিটা বোধহয় গেল। উনি হেসে বললেন, অঅঅঅভিনয়টাও ঠিকমত কককরতে পারিস না।

কত স্মৃতি, কত ঘটনা। সম্ভবত ১৯৯৬ সাল। ‘গণস্বাস্থ্যের ২৫ বছর, স্বাধীনতার ২৫ বছর’ নামে এক অনুষ্ঠান হবে সাভারে। কমিটিতে আমাকে রাখলেন। আমার দায়িত্ব হলো বিদেশ থেকে যে সমস্ত অতিথি আসবেন তাদের দেখভাল করা। তখনও বিয়েথা করিনি, থাকি সাভার পিএটিসিতে সাবলেট। দিনরাত কাজ করেছি। বিদেশ থেকে কত নোবেল বিজয়ী, বিখ্যাত সব চিকিৎসা বিজ্ঞানী, সমাজসেবী যাদের নাম পড়েছি পত্রপত্রিকায়, আমার দায়িত্ব ছিল এয়ারপোর্ট থেকে তাদের রিসিভ করে গনস্বাস্থ্যের সাভার ডর্মিটরিতে নিয়ে যাওয়া। সেই তরুন বয়সে এত এত নোবেল বিজয়ীদের চোখের সামনে দেখতে পাওয়া, তাদের সাথে কথা বলা, একসাথে থাকা খাওয়া বিষয়টি বেশ এক্সাইটেড। যেখানে ডাক্তার, নার্স, অফিস স্টাফরা থাকত সেখানেই সাফ সুতরো করে সেই বিখ্যাতদের থাকার ব্যাবস্থা করা হয়েছিল। সেই পরিবেশে আমিই থাকতে পারতাম না, যত রাতই হোক বাসায় চলে আসতাম। অথচ সেই বিখ্যাত মানুষগুলো অবলীলায় সেখানে ঘুমাতো। উল্লেখ্য তারা সবাই নিজ নিজ খরচেই বাংলাদেশে এসেছিলেন, থেকেছেন শুধু জাফর ভাইয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে। তখন দেখেছি এইসব বিখ্যাত মানুষরা জাফর ভাইকে কতটুকু সমাদর করে, ভালবাসে।

এরকম হাজারো স্মৃতি। বলতে গেলে পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে। উনার মত পরিশ্রমী দেশপ্রেমিক, দরদী এবং সত্যিকার অর্থে একজন জ্ঞ্যানী ব্যাক্তি বাংলাদেশে রেয়ার। আমি অবাক হয়ে ভাবতাম একজন মানুষ কিভাবে দিনরাত ২৪ ঘন্টা শুধু দেশ দেশ করে। যে চার বছর উনার সাথে কাজ করেছি, উনাকে দুইটা শার্ট আর একটা জিন্স প্যান্ট পড়া অবস্থায় দেখেছি। উনার চুল কেটে দিতেন ভাবী। চুল কাটা মানে কেচি দিয়ে চুল ছোট করা। গাড়িতে চলার সময় ভুপেন হাজারিকার গান খুব পছন্দ করতেন, আর পুরানো দিনের হিন্দি গান। বিশেষ করে মুঘল ই আজম ছবির পেয়ার কিয়া তো ডারনা কিয়া গানটা। পছন্দের খাবার ছিল ডিমভাজি দিয়ে মুড়ি, আর চা দিয়ে চুবিয়ে গরম গরম পুরি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, বিলাতের স্মৃতি, ওষুধ নীতি, স্বাস্থ্যনীতি এরশাদ, জিয়া, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তার মধুর অভিজ্ঞতা আমাকে বলতেন। একমাত্র গণস্বাস্থ্য’র সব প্রতিষ্ঠানে হিসাব কিতাব বেতন সবকিছু বাংলায় হতো। বাংলার প্রতি, বাংলাদেশের প্রতি তার ছিল মাত্রাতিরিক্ত ভালবাসা। গণস্বাস্থ্য ছাড়ার পরও উনার সাথে যোগাযোগটা অব্যাহত ছিল। ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের সামনে দিয়ে গেলে উনার সাথে দেখা করতাম। শেষ দেখা হয়েছে গতবছর। উনার রুমে যেয়ে দেখি এক হুজুরের কাছে মনযোগ দিয়ে কোরান শরীফ পড়ছেন। তরুন বয়সে জাফর ভাই আমাকে প্রভাবিত করেছিল। দেশপ্রেমের ছবকটা উনার কাছ থেকেই প্রথম পেয়েছিলাম।

লেখক : গবেষক ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কন্টেন্ট সুরক্ষিত!!